ইচ্ছেডানার আয়োজনে এক বিকল্প নাট্যসন্ধ্যা

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিনিধি


গতকাল কলকাতার প্রসেনিয়াম আর্ট সেন্টারে ইচ্ছেডানার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল তাদের অন্তরঙ্গ নাট্য আয়োজন। আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা ইচ্ছেডানার প্রাণ জবা শর্মা। তাঁরই সঞ্চালনায় সমগ্র অনুষ্ঠানটি যেন একটি সূতোয় বাধা। অন্তরঙ্গতার ছোঁয়া যেন অনুষ্ঠানের পরতে পরতে মাখামাখি হয়ে আছে। দর্শক আর নাট্যকর্মীদের মধ্যে দূরত্বকে তিনি তাঁর সাবলিল বাচনে দূরে সরিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে গান গেয়ে অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে দিয়েছেন অভিনেত্রী মৃন্ময়ী। এরপর ‘রূপ ও রঙ’ নাট্যদলের নাট্যকর্মী মোহনার অসাধারণ কবিতা বলা অনুষ্ঠানের আর একটি ধাপ অনুষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এরই পরে অনন্যা মালাকারের নৃত্য পরিবেশনা।

প্রারম্ভিক এই অনুষ্ঠানের পর শুরু হল নাট্য প্রদর্শন। প্রথম নাটিকা ইচ্ছেডানার প্রযোজনায় জবা শর্মার লেখা নাটক বা স্কেচ ‘খেলা’ অভিনয় করলেন টুম্পা পাল। নাটকের বিষয়বস্তু এক লাঞ্চিত নারীর বন্দীদশার যন্ত্রণা ও মুক্তির খোঁজ। বাচিক ও কায়িক অভিনয়ে তিনি যেন বিষয়টিকে তুলে ধরতে পেরেছেন এমনই মনে হল নাটকের শেষে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া থেকে। এরপর থার্ড বেল প্রযোজিত আন্তন চেকভের নাটক ও অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাট্য রূপদানে নির্মিত নাটক ‘একটি ডেইলি প্যাসেঞ্জারের করুণ কাহিনী’। অভিনয় করেছেন শান্তনু ও দীপ। এই নাটকটিও দর্শক বেশ উপভোগ করেছেন।



এবার হালতু কাব্যাঙ্গন প্রযোজিত শবর রায়ের নাটক ‘সর্বাঙ্গসুন্দর’ অভিনীত হল। একক চরিত্রের এই নাটকে একক অভিনয় করলেন এই মুহুর্তের একজন দক্ষ অভিনেত্রী বেবী সেন। চরিত্রটি ছিল মভাভারতের অতি অনুল্লেখিত একটি চরিত্র, হিরিম্বা। হিরিম্বার যে রূপ জনমানষে প্রতিষ্টিত বা প্রচারিত-প্রচলিত তার বাইরে গিয়ে মহাকাব্যের গভীর থেকে নাট্যকার তুলে এনেছেন এক অনন্য সত্যকে। এই নাটকের পরিচালনা করেছেন দেবা রায়। এই নাটকটিও দর্শক ধন্য হয়েছে।

সবার শেষে অভিনয় স্থলে এসে আসল পেরেকটি গেঁথে দিলে ইচ্ছেডানার প্রধাণা জবা শর্মা। এই সন্ধ্যায় জন্ম হল একটি নাটকের। একটি ভাবনাকে তিনি গতকাল সকলের সামনে তুলে ধরলেন তার অভিনয় দক্ষতা দিয়ে। একটি পেরেকের আত্মকথা। পেরেকটি নিজের কথা বলতে বলতে সমাজের নির্মম সত্যকে নির্দ্বিধায় তুলে আনলেন দর্শকের সামনে। যা আজকের সময়কে কোনোভাবেই রেয়াত করবে না বলেই ঘোষণা করলেন জবা শর্মা। সকলেই এই নাটকের অপেক্ষায় থাকছেন এমনি জানালেন দর্শক জন। মাঝে, বিলুপ্তপায় প্রাণিদের নিয়ে কাজ করা একজন কর্মী, শেলী  তসলিমার ভালোবাসা কবিতাটি আবৃত্তি করলেন। 


এই নাটকে বাংলা নাটক ডট ইনের একটি বড় অন্বেষণ। এই প্রসেনিয়াম আর্ট সেন্টারে নিয়মিত নাটক দেখেন এমন এক মানুষকে পাওয়া গেল। তিনি নিভৃতে এসে নাটক দেখে যান। এইদিন পরিচালক জবা শর্মা এহেন দর্শককে ফোনে আমন্ত্রণ জানান অনুষ্ঠান শুরুর কিছু আগে। এবং অব্যবহিত পরেই এই মানুষটি এসে হাজির। ইনি হলেন শিখা দত্ত। বাংলা নাটক ডট ইন তার কাছে আবেদন রাখে, তার দেখা নাটকগুলি তিনি যেন আমাদের লিখে দেন। তিনি আমাদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।  


আর এখানেই এই অন্তরঙ্গ নাট্য আয়োজনের সার্থকতা।

- Advertisement -
সাম্প্রতিক পোস্ট
এধরনের আরও পোস্ট
- Advertisement -