শহীদ স্মৃতি সংঘের আয়োজনে মাতৃভাষা দিবস পালন

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিনিধি

গতকাল, বুধবার শহীদনগর শহীদ স্মৃতি সংঘের আয়োজনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হল তাঁদেরই সংঘের মুক্ত প্রাঙ্গনে। অঞ্চলের মানুষের যোগদানে প্রাঙ্গণ সেজে উঠেছিল, বাংলা বর্ণমালা দিয়ে। সব বয়সের মানুষ এই আয়োজনে সামিল হয়েছেন। এই উদ্যোগে একটি  অভিনব ভাবনা আগত দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিল।

সংঘের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সব্যসাচী সেনগুপ্ত মনে করেন, বাঙালির কথ্য ভাষা ‘বাংলা’ কথনে যেন কোনও ইংরেজি শব্দ না থাকে। একজন বাঙালির তার ভাষাকে সম্মান জানানোর জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহারের চর্চা ও সচেতনতা থাকা উচিত। আর এই মর্মেই তাঁরা আয়োজন করেছিলেন একটি প্রতিযোগিতা।

যে প্রতিযোগিতায় নির্দিষ্ট সময় বেছে দেওয়া হবে প্রতিযোগীকে। একটি পাত্র থেকে বিষয় নির্বাচন প্রতিযোগীকে নিজেকেই করতে হবে। অনুষ্ঠানের মাঝে মাঝে সঞ্চালিকা জয়িতা সমাদ্দার প্রতিযোগীকে ডেকে নেবেন এবং বেছে নেওয়া বিষয় নিয়ে সেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুদ্ধ বাংলায় বক্তব্য রাখতে হবে।

এই প্রতিযোগিতায় স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে অনেককেই যোগ দিতে দেখা যায়। এবং দেখা গেল অনেকেই ইংরেজি শব্দ ছাড়াই তাদের বক্তব্য দিব্য রাখতে পারলেন। একটি অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষার সঙ্গে এইভাবে দর্শকদের যুক্ত করে নেওয়া নিঃসন্দেহে একটি সৎ প্রচেষ্টা বলতে হয়।

এদিন শহীদ স্মৃতি সংঘের নিজস্ব গানের দল ‘আবেশ’-এর পরিচালনায় বিশেষ গানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের উদ্বোধন হয়। এরপর জয়িতা সমাদ্দারের পরিচালনায় সংঘের নৃত্য বিভাগের নৃত্যানুষ্ঠান মানুষের মন জয় করে। ঠিক তার পরে ছোট্ট এক শিশু আন্ত্রিকা চক্রবর্তী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বেহালা বাজিয়ে আর বাংলা গানের আবেশে প্রাঙ্গণ মাতিয়ে দিলেন।

এরপর দ্যুতিপর্ণা দত্তর পরিবেশনায় ছিল একক নৃত্য। তারপর শহীদ স্মৃতি সংঘের নিজস্ব নাট্যদল ‘দক্ষিণের বাতাস‘-এর পরিবেশনায় বাড়তি পাওনা হিসেবে পেশ করা হল একটি অনবদ্য মৌলিক শ্রুতিনাটক। ‘মহলার আড্ডায়’ নাটকের রচয়িতা সংঘেরই একজন সদস্য শিবশঙ্কর সাহা। অভিনয়ে মৌসুমি দত্ত, রাজরূপা সেন, কল্যাণ দাস, অর্কন ব্যানার্জী ও শিবশঙ্কর সাহা।

সব মিলিয়ে বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারির সন্ধ্যা যেন বাংলা-ভাষাস্নাত হল শহীদনগর শহীদ স্মৃতি সংঘের আয়োজনে। বাংলার নানাবিধ সুর, নৃত্য, অভিনয়ে সঙ্ঘ প্রাঙ্গণ বাঙালির নিজস্ব হয়ে সেজে উঠেছিল। অনুষ্ঠানের শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।  

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কলকাতার এই সংঘ বাংলা সংস্কৃতিকে বহুবছর ধরে রক্ষা করে আসছে। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি খেলাধুলা নিয়েও এদের নিয়মিত চর্চা চলছে। বলা যায় সারাবছর এক বিশাল কর্মকাণ্ড চলে এই সংঘে। এই সংঘকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন সংঘের সদস্যরা এবং অভিভাবকত্বে সম্পাদক জয় বন্ধু মুখার্জী ও সভাপতি সঞ্জয় চক্রবর্তী।

(এধরণের নাটক কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের খবর যদি প্রকাশ করতে চান তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ করুন এই নম্বরে – ৯৮৩১৭৩৬৬৯৫ কিংবা মেল করুন – banglanatokdotin@gmail.com-এ)

- Advertisement -
সাম্প্রতিক পোস্ট
এধরনের আরও পোস্ট
- Advertisement -