অনীক আয়োজিত ‘সদরে মফঃস্বল’ নাট্য সন্ধ্যায় নদীয়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দুটি দল নাটক করে গেল গতকাল অর্থাৎ ২২ শে মে তপন থিয়েটারে। প্রথমটি রাণাঘাট সৃজক প্রযোজিত তীর্থঙ্কর চন্দ-র নাটক ‘খর-তামাশা’ দ্বিতীয় নাটক ভাটপাড়া আরণ্যক থিয়েটার গ্রুপ প্রযোজিত ‘কুহক তন্ত্র’। গত ৮ই মে এই ‘সদরে মফস্বল’-এর উদ্বোধন হয়েছিল।
উক্ত দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড গৌরব দাস। অনীক সংস্থার কর্ণধার অরূপ রায় এই আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করেন। বিভিন্ন জেলায় সারাবছর ধরে নিয়মিত নাট্যচর্চা করে যায় জেলার নাট্যদলগুলি। কিন্তু যে কোনো উৎসব ছাড়া তারা নিজস্ব উদ্যোগ বা ব্যবস্থাপনায় সবসময় কলকাতা সদরের দর্শকের কাছে এসে নাটক করার সুযোগ পান না । তার প্রধান কারণ এক অর্থ আরেক দূরত্ব। আর কাজটিকে সহজ করে দিতে এগিয়ে এসেছেন এই মুহুর্তের এক বহু পরিচিত এক নাট্যদল অনীক। এর আগে আমরা দেখেছি, সারা বছর তাঁরা জেলার বহুদল নিয়ে বিভিন্ন জেলায় নাটকের উৎসবের আয়োজন করেছেন। এবার ‘সদরে মফঃস্বল’ শীর্ষক নাট্যসন্ধ্যার সূত্রপাত করলেন। যা প্রতিমাসের প্রথম সোমবার ও তৃতীয় সোমবার তপন থিয়েটারে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে। জেলার দলগুলির কাছে এটা অত্যন্ত সুখবর। পাশাপাসি কলকাতার দর্শক ও নাট্যকর্মীদের কাছেও এক আনন্দের বার্তা।
প্রথম নাটক ‘খর-তামাশা’র পরিচালক নিরূপম ভট্টাচার্য এই আয়োজনের সাফল্য কামনা করে অনীক নাট্য সংস্থাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি নাটকের শেষে পরবর্তী নাটক ‘কুহক তন্ত্র’ নাটকের পরিচালক সঞ্জয় আচার্য ও অনীক নাট্যদলের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানান।
দুটি নাটকের শেষে অনীক দুই দলের দুই পরিচালকের হাতে স্মারক তুলে দেন। এই আয়োজনের পাশে থাকা ও সাফল্য এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য এগিয়ে এলেন কলকাতার আরেক নাট্যদল ‘মিউনাস’। মিউনাস দলদুটিকে তাঁদের স্মারক প্রদান করেন। প্রসঙ্গত এই মিউনাস ঠিক একই উদ্দেশ্যকে পাথেয় করে দীর্ঘদিন ধরে আয়োজন করে আসছেন ২৪ ঘন্টার নাট্যোৎসবের যেখানে অন্তত ২২টি নাটকের মধ্যে থাকে ১৮টি মফঃস্বলের নাট্যদল।
নাট্য অঙ্গনে এই ভাতৃত্ব নিশ্চই বাংলার নাট্যচর্চাকে নতুন দিকের সূচনা করে দেবে। মফঃস্বল সদরে এলে তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, আঞ্চলিকতার মধুরতম দিকগুলি শহুরের মানুষের কাছে প্রতিভাত হবে। এই আয়োজন নিঃসন্দেহে আমাদের শহুরে নাট্যমোদি মানুষের কাছে খুশীর খবর। আর এই মুহুর্তে এর মূল কাণ্ডারি অনীক নাট্যদল।