শ্যামল চন্দ
গত ১০ই এপ্রিল তপন থিয়েটারে অভিনয় হয়ে গেল মিউনাসের বহুদিনের প্রযোজনা ‘লজ্জা’। মিউনাস প্রযোজিত “লজ্জা” নাটকটি দেখলাম। প্রত্যেক নাট্যদলের একটা আদর্শ থাকে সেই আর্দশগত দিক থেকে মিউনাস আমার পছন্দের দল।ওদের নাটক না দেখেও বলে দিতে পারা যায়, আজকের ক্ষয়িষ্ণু সমাজের কোন অমানবিক ঘটনা নিয়ে অভিনয় ভিত্তিক ও বলিষ্ট বক্তব্য সমেত একটি প্রযোজনা। “লজ্জা” এর ব্যতিক্রম নয়। পনের বছর আগের লেখা এই নাটকটা দেখতে দেখতে একবারও মনে হয়নি ঘটনার প্রেক্ষিতটা আজকের নয়। এই কারণেই নাট্যকার/পরিচালক উৎসব দাসের দর্শকের পক্ষ থেকে অভিনন্দন প্রাপ্য।
এই নাটকের মাধ্যমে উৎসব একটা কঠিন প্রশ্ন তুলে ধরেছেন দর্শকের কাছে। সমাজে কোন ভয়ংকর ঘটনা ঘটলে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদি কন্ঠস্বর শোনা যায় এমন কী তারা পথেও নামেন বিশেষ করে ভয়ংকর কুৎসিত ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রেও অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে। মিডিয়া ঐ নক্বারজনক ঘটনার প্রচার কোরে নিজেদের টিআরপি বাড়ায়। কিন্তু ঐ একই মানুষের পরিবারে যদি এই ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটে তাহলে সে কী আগের মতোই প্রতিবাদে সরব হতে পারে?
বোধ হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই না। বিশেষ করে সমাজের উচ্চমধ্যবিত্ত ও তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেণির মানুষজন। তখন তাদের মুখোশ খুলে বেরিয়ে আসে কদর্য এক স্বার্থপর মুখ। তখন তাদের কাছে প্রাধান্য পায় ব্যক্তিগত ও পরিবারের মানসম্মান বোধ। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে কেউ যদি নিজের প্রান বিসর্জন দেয় তাহলেও তাদের মনে বিন্দুমাত্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনা। চেষ্টা করে সব রকম প্রভাব খাটিয় ঘটনা টা কে ধামা চাপা দিতে। এই ধরনের ঘটনা যতটা ওদের লজ্জা তার থেক অনেক বেশি লজ্জার আমাদের আমাদের সমাজের।
এই বিষয় নিয়েই মিউনাসের নাটক “লজ্জা” এই ধরণের সম্পুর্ন অভিনয় ভিত্তিক নাটক অভিনয়ের জন্য প্রয়োজন নিখুঁত অভিনয়ের মাধ্যমে নাটকের ঘটনা প্রবাহ কে টান টান করে ধরে রাখা। কিছু ক্ষেত্রে এই বিষয়টা একটুশ্লথ মনে হলেও দর্শকের মনে দাগ কাটতে মিউনাস সমর্থ হয়েছে।
মিউনাসের জন্য রইল আন্তরিক অভিনন্দন।