Tuesday, November 19, 2024
Tuesday, November 19, 2024
Homeখবরসম্মানিত থিয়েটার ফোরামের নাটকের শো (কবে কোথায়)-এর উদ্ভাবক সত্যজিৎ রায়

সম্মানিত থিয়েটার ফোরামের নাটকের শো (কবে কোথায়)-এর উদ্ভাবক সত্যজিৎ রায়

দুলাল চক্রবর্ত্তী, ফরাক্কা

কোচবিহার কম্পাস নাট্য পরিবার, তাঁদেরজাতীয় নাটকের উৎসব  ২০২৪ -এর দ্বিতীয় দিনে, ১৯/০১/২০২৪ তারিখে সম্মানিত করলো, থিয়েটার ফোরামের নাটকের শো (কবে কোথায়)-এর প্রথম উদ্ভাবক, নাটকের তরুণ তুর্কি, সব দলের নাট্যবন্ধু সত্যজিৎ রায়কে।

অনেক মানুষই বিদগ্ধ নাট্য কীর্তিতে বহু জায়গায় সম্মানিত হয়ে থাকেন। এটা ঘটেই। হতেই পারে। কিন্তু সত্যজিতের সম্মাননা প্রাপ্তি ভিন্ন প্রসঙ্গের বিষয়। প্রশ্ন ওঠে হঠাৎ সত্যজিৎ কেন?

তাই এবার বলি, আমার ব্যক্তিগত জানায় সত্যজিৎ রায়কে আমি ২০১৩ সাল থেকে চিনি। কোচবিহার রবীন্দ্র ভবনে তাঁকে সম্মাননা দেবার দৃশ্য চাক্ষুষ করে আপ্লুত হলাম। ধন্য কম্পাস নাটকের ফেস্টিভ্যাল। এই ধরনের ব্যতিক্রমী বিশেষ নাট্য চিন্তায়, কম্পাস পশ্চিম বাঙলার সমস্ত নাট্যদলকেই প্রকারান্তরে সহায়তা করে ফেললো।

কারণ আনন্দবাজার পত্রিকার ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপনের খরচ থেকে বাঁচাতে, ২০১৫ সালে এই যুবকই প্রথম ভেবেছিলেন রাজ্যের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নাট্যদলগুলিকে একত্রিত করার কথা। সোস্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে সমগ্র শিল্পী কুশীলবদের মধ্যে লেনদেনের এক সমবেত সংহতির প্রকৃয়া-কথা এই যুবকই ভেবেছিলেন।

নাটকের প্রচারের উর্ধ্বে অসহায় নাট্যদল ও নাট্যকর্মীদের বিপদে পাশে দাঁড়াতে এবং সহায়তা দিতে, এযাবৎ এই নাটুকে ছেলেটিই বহু কাজে এগিয়ে গেছেন। অন্যায়ের মুখোমুখি গিয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করার চেষ্টা তিনি করেছেন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে নাট্যকর্মীদের একজোট করেছেন।

থিয়েটার ফোরামে ব্যানারে নাট্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশ করে নিজের বই ভালবাসাকে সবার জন্যে প্রকাশনা প্রবর্তন করে এক বইয়ের দরবার উন্মুক্ত করেছেন। বর্তমানে মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে বাংলার বহু কৃতি শিল্পী কুশীলবদের সংযুক্ত করে, তাদের সামর্থ্য আলোয় আলোচিত হবার সুযোগ করে দিচ্ছেন।

বলা যেতে পারে সবার কথা ভাবার, আর সবাইকে নিয়ে চলার অসাধারণ মনোবলে বলীয়ান এই তরুণ আমার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। প্রচার সর্বস্ব যুগে বাংলা মফস্বলি থিয়েটারের নিজের পায়ে তলায় মাটি দেবার জন্য তিনি কিছু উপায় ভেবে, নিরন্তর লড়াই করেছেন।

২০১৮ সালে একটি প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে দিয়ে কলকাতার তথাকথিত নাটকের জগতের উষ্মায় পড়ে, আইন আদালতে বিপর্যস্ত হয়েছিলেন। প্রায় চার বছর ধরে এই সবার প্রিয় নাট্য বন্ধু, কোর্ট কাছারীর ঘেরাটোপে আটকে পড়ে চরম বিপন্নতার মধ্যেও, নাটকের শো(কবে কোথায়) থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেননি।

সবার চলাই তার অগ্রগতি, এই ভাবনার জয়ে যুবকের অবদানকে রাজ্যের আত্মকেন্দ্রিক ও আত্মম্ভরি নাট্য জগতের মধ্যে পাওয়া, এক বিস্ময় বলে মনে করি। কারণ জনৈক বিশিষ্ট নাট্য প্রবর্তকের দ্বারা সে উৎপীড়িত হয়ে, চরম বিভ্রান্তির মধ্যে, চার বছর কালে অসম্ভব মানসিক নির্যাতন সহ্য করেও কাজ থেকে সরে যায় নি।

তা-ই যে নাট্যজন সবাইকে নিয়ে ভাবতে পারেন। সবাইকে ভালবাসতে পারেন। সেই-ই প্রকৃত নিঃস্বার্থ নাট্যবন্ধু হতে পারে। এই মর্মে সত্যজিৎ রায়কে সম্মান প্রদান নিঃসন্দেহে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে হয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular