Sunday, July 13, 2025
Sunday, July 13, 2025
Homeসিনেমাসত্যজিৎ রায়ের ছেলেবেলার ছবি

সত্যজিৎ রায়ের ছেলেবেলার ছবি

সুব্রত রায়

বাংলায় সম্পদশালী শিশু সাহিত্য থাকলেও ছোটদের জন্য ভালো বাংলা চলচ্চিত্র খুব কমই নির্মিত হয়েছে। আর যা হয়েছে তার সিংহভাগই সত্যজিৎ রায় নির্মাণ করেছেন। অবশ্য এ ব্যাপারে তাঁর কিছু সুবিধাও ছিল, কারন রায় পরিবার থেকেই বাংলার অধিকাংশ শিশু সাহিত্যিকরা এসেছিলেন। ফলে শিশুদের যে জগৎ সে সম্পর্কে সত্যজিতের একটা স্পস্ট ধারণা থাকাই স্বাভাবিক। পরে “সন্দেশ” পত্রিকা সম্পাদনার সূত্রে তিনি হাতে কলমে কাজের মধ্য দিয়েই শিশুদের জগতে প্রবেশ করলেন এবং শিশুমনস্কতা সম্পর্কে তার ধ্যানধারণা আরো পুস্ট হলো। সর্বোপরি তিনি নিজেও একজন শিশু সাহিত্যিক রূপে আত্মপ্রকাশ করলেন।

শিশু চলচ্চিত্রের স্তরভেদ আছে। সব শিশুচিত্র সব বয়সের শিশুদের বোধগম্য বা গ্রহণীয় নাও হতে পারে। এ ব্যাপারে ছোটদের ভালোলাগে রূপকথার গল্প বা জন্তুজানোয়ার দের তোলা ছবি। সম্ভবত সত্যজিৎ রায় এদের কথা ভেবেই উপেন্দ্রকিশোরের রূপকথার গল্প অবলম্বনে নির্মাণ করলেন “গুপি গাইন বাঘা বাইন” ছবিটি। আর সত্যজিতের সৃষ্টিশীলতায় তা শুধু বিশ্বের একটি শ্রেষ্ঠ শিশু চলচ্চিত্রই হয়ে উঠল না, হয়ে উঠল আবাল-বৃদ্ধ বনিতার ভালো লাগার ছবি। জনপ্রিয়তার নিরিখে এই ছবি কলকাতায় এই সম্মিলিত ভাবে ১০০ সপ্তাহ চলেছিল। যা সেই সময় ছিল রেকর্ড। দুঃখজনক হলেও সত্যি সেই রেকর্ড বাইশ বছর পর ভেঙে দিল “বেদের মেয়ে জোৎস্না” ছবিটি।

একটি সার্থক ছোটদের ছবি বয়স্কদের বিনোদিত করে আর রূপক হলে বয়স্কদের দৃষ্টিতে তা অতিরিক্ত মাত্রাও পেয়ে যেতে পারে। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি যে, আমাদের দেশের ছোটদের ছবি নিয়ে আলোচনার সময় বিশেষ করে তা সত্যজিৎ রায়ের ছবি হলে সেটি কি কারনে শিশুচিত্র হয়ে উঠলো সে আলোচনা প্রায় হয় না, যা থাকে তা হলো বয়স্কদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা। ফলে একটি ছোটদের ছবি ছোটদের কাছে উপভোগ্য হলো কিনা বা তাদের মানসিকতায় ছবিটি কি প্রভাব ফেললো—এ সবই থাকে উপেক্ষিত। আমার আলোচনাকে আমি শিশুচিত্রের সার্থক—অসার্থকথার প্রশ্নেই সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবো। কিন্তু অত্যন্ত সবিনয়ে জানিয়ে রাখি তা বোধহয় সবসময় সম্ভব হবে না। কেননা সত্যজিৎ রায়ের এই ছোটদের ছবিগুলি আট বছরের বালক, পঞ্চাশ বছরের প্রৌঢ় বা আশি বছরের বৃদ্ধের কাছে আলাদা আলাদা ভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। এর প্রধান কারন হলো সত্যজিৎ রায়ের ছবি সবসময়ই বহুমাত্রিক। শিল্পের অনেক গুলি স্তরে একই সঙ্গে সেগুলি বহমান থাকে। উপেন্দ্রকিশোরের “গুপি গাইন বাঘা বাইন” এর সাহিত্যের ভাষাকে সত্যজিৎ যখন চলচ্চিত্রের ভাষায় রূপান্তর ঘটালেন তখন সেট-সেটিং, ক্যামেরা, মেক-আপ, সংলাপ, সম্পাদনা, গান প্রভৃতি চলচিত্রের বিভিন্ন বিষয়কে ছোটদের মনস্কতার উপযোগী করে ব্যবহার করলেন। ফলে কাহিনীর রূপকথার যে জগতকে তারা কল্পনা করতো তা প্রত্যক্ষ করে তার উপভোগ্যতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেল।

ছবির বাস্তব অংশে গ্রাম থেকে বিতাড়িত গুপী যখন প্রবাদ প্রবচনের মতই সন্ধ্যার মুখে বনের ধারে এসে পড়ে বাঘের ভয়ে ভীত হয়ে পড়লো, তখন শিশু মনে যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয় ঢোলে জল পড়ার আওয়াজ তার সঠিক পরিপূরক। অবশ্য বাঘের বদলে বাঘার সঙ্গে দেখা হয়। এটা লক্ষ্যনীয় যে বাঘার গ্রাম থেকে বিতাড়নের কাহিনী দেখানো হয় না, যে লোভ বেশিরভাগই পরিচালক সম্বরন করতে পারতেন না। এটাই পরিমিত বোধ।

ভূতের রাজার আবির্ভাবের মধ্য দিয়েই রূপকথার জগৎ শুরু। ছবিটি ভূত নামক কুসংস্কার থেকে ছোটদের মনকে মুক্ত করতে না পারলেও পুরোনো ধারনায় ভাঙন আনা হলো। ছবির ভূত ভীতির সঞ্চার না করে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করলো এবং গুপী-বাঘার ভাগ্য ফিরিয়ে দিল। এখানে লক্ষ্য করি যে গুপী-বাঘা ভূতের রাজার সঙ্গে কথা বলছে, আবার বর পাওয়ার পর দেখি যে তারা ঘুমোচ্ছে। অর্থাৎ সমস্ত ব্যাপারটা বাস্তব না স্বপ্ন এটা পরিচালক দর্শকদের কাছে একটু ঘোলাটে করেই রেখেছেন। আর ভূতের রাজার পেছনে চলচ্চিত্রে বৈদ্যুতিক ব্যবহারের মাধমে সত্যজিৎ কি সায়েন্স ফিকশনের কথা বললেন। সেটা কি অন্যগ্রহের জীব না অন্য কিছু?

এই ছবিতে গুপী—বাঘার প্রধান অস্ত্র হলো গান। মানুষের গান-বাজনা যে অনুভূতি আনে যা তাকে ক্ষনিকের জন্য তন্ময় করে দেয়। এই বাস্তব ক্ষমতাকেই রূপকথার অংশে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যাদুকর বরফির ক্ষমতাও অলৌকিক নয় বরং বিজ্ঞান নির্ভর। তার প্রমান তার ল্যাবরেটরি আর অনিচ্ছুক সৈন্যদের যুদ্ধে পাঠানো হয় সম্মোহন করার ভঙ্গিতে।

ছবিতে রূপকথার জগৎ ঠিক করতে না পারলে শিশুদের মন যে ভরবে না, এটা সত্যজিৎ রায় জানতেন। অথচ বাংলা ছবির সীমিত বাজারের জন্য এলাহী খরচ সম্ভব নয়। তাই নিজের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে তাঁকে সেই অভাব পূরণ করতে হয়েছে। নেগেটিভ ব্যবহার করে তিনি ভূতের রাজার রূপ দিলেন আর টেপের গতির হেরফের করে মানুষের স্বরকে বিকৃত করলেন। এবং সেইভাবে ভুতের রাজার গলার স্বরের এফেক্ট আনলেন। ভূতের রাজার গলাটি আসলে সত্যজিৎ রায়ের গলা, যেখানে ওই এফেক্ট টা দেওয়া হয়েছে। আর ভূতের নাচের দৃশ্য তিনি যে পদ্ধতিতে তুললেন তা এককথায় অভিনব। এই ভূতের নাচের দৃশ্যটি এবং তার সঙ্গে দক্ষিণ ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের অপূর্ব ব্যবহার এই ছবির সম্পদ। এই দৃশ্যটি শিশু থেকে বোদ্ধারা সবাই উপভোগ করবে, আর এই নাচের মধ্য দিয়ে উনবিংশ শতাব্দীর কলকাতাকে খুঁজে নিতে পারেন।

রূপকথার জগত সৃষ্টিতে মেকআপ বিরাট ভূমিকা নেয়। নানা দেশের সাজসজ্জা থেকে সত্যজিৎ উপকরণ সংগ্রহ করেন। জাদুকর বরফির কালো চৌকো চশমা ঢাকা চোখ ও দাড়ি ঢাকা মুখ তাকে শিশুদের কাছে বেশ রহস্যময় করে তোলে। তার মাথার দুটো শিং পিকিং অপেরা থেকে নেওয়া। শুন্ডির রাজার সাদা পোশাকের বিপরীতে হাল্লা রাজার পোশাকে কালো ভাব কুচক্রীর ছাপের ইঙ্গিত দেয়।

সেট-সেটিং ও রূপকথার পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়াস দেখা যায়। হাল্লার রাজার ঘরে হিংস্র পশুদের মুখ ভয়ংকরপরিবেশ সৃষ্টি করে আর শুন্ডির রাজ্যে গুপী বাঘার বসার ঘরের মধ্যে ফোয়ারা আর বাঘার সংলাপ, “ব্যবস্থা বেশ ভালোই” এক আনন্দময় পরিবেশের আভাস দেয়। ছবিটিকে আরো বেশি জমাটি ও মনোগ্রাহী করে তুলতে গান একটি মস্ত বড় ভূমিকা নেয়। এই গানের মধ্য দিয়ে সত্যজিতের অন্য এক প্রতিভার সন্ধান পাই। এই গানগুলির সহজ সরল ভাষা ও সুর শিশুমন স্পর্শ করে। এই গান দিয়েই গুপী-বাঘা দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করে।

“গুপী গাইন বাঘা বাইন” এর পরবর্তী পর্যায়ের ছবি “হীরক রাজার দেশে” ছবিটির রস একেবারে ছোট শিশুরা ততখানি আস্বাদন করতে পারবে না, যতটা পারবে কিশোররা। এর একটা কারন হতে পারে ওই ছবির কাহিনীকার সত্যজিৎ নিজে, যিনি মূলত কিশোরদের জন্যই গল্প লিখতেন। তবে জরুরী অবস্থার অব্যবহিত পরে নির্মিত এই ছবিটিতে জরুরী অবস্থাকালীন স্বৈরতান্ত্রিকতা সত্যজিতের শিল্পী মনকে প্রচন্ড নাড়া দিয়েছিল | সত্যজিৎ নিজেই একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে দরিদ্রদের উৎখাত করার দৃশ্যটা জরুরী অবস্থার সময়ে দিল্লীর অনুরূপ ঘটনার (Great clean up) এর প্রতিফলন। ফলে ছবিটি পুরোপুরি রূপকথা হলো না, বাস্তব এসে মেশে। শুধুমাত্র গুপী-বাঘার গান দিয়ে রাজা পরাভূত হননি, জনশক্তির প্রয়োজন হয়। শিক্ষক উদয়ন, তার ছাত্ররা এবং শ্রমিক কৃষক সেই সংগ্রামে অংশ নেয়। গুপী-বাঘা সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করে মাত্র। রূপকথা না হয়ে ছবিটি হয়ে যায় রূপক। তাই আধুনিক সমাজে শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি সত্যজিতের কটাক্ষ বা মগজ ধোলাইয়ের মত ব্যাপারগুলি, যেগুলি সরাসরি বলায় বাধা বিপত্তি অনেক, সেগুলি রূপক হিসাবে আসে। তবে এগুলি ছোট শিশুদের কাছে কঠিন হলেও কিশোরদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। রাজসভার দৃশ্যটিতে বোঝা যায় দেশের আসল অবস্থাটা। একদিকে রাজা ও তার সভাসদ ও অন্যদিকে অভুক্ত, অর্ধভুক্ত ও অত্যাচারিত মানুষ। সভায় ব্যবহৃত লোকগীতিটি কত সহজ, সরল অথচ কথা, সুর ও গায়কীর গুনে হৃদয়বিদারক যা কিশোর মনেও মানবিক অনুভূতি সৃষ্টি করে।

ছোটদের চলচিত্রের অন্যতম শর্ত হলো বিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মনে শিক্ষার বীজ বুনে দেওয়া। আমার বিশ্বাস ছবিটি দেখার পর শোষিত মানুষের প্রতি ছোটদের মনে সহানুভূতির উদ্রেক করবে। আর সেটা হলো একটা মস্ত বড় প্রাপ্তি।

তবে ছবি দেখতে এসে ছোট শিশুরা একেবারে নিরাশ হয় না। এখানেও “গুগাবাবা”র মতোই আছে মন মাতানো সহজ সরল গান। আর আধুনিক কবিতাতেও যেখানে ছন্দের অভাব, সত্যজিৎ সেখানে সংলাপে নিয়ে এলেন ছন্দ। আর রাজকোষে সত্যজিৎ যেভাবে বাঘ হাজির করেছেন (সঙ্গে গান) তাতে শিশুমনে একসঙ্গে বিস্ময়, শিহরণ ও পুলক জাগে। শেষ দৃশ্যে মূর্তি ভাঙার দৃশ্যটিতে-প্রেক্ষাগৃহের কলরব থেকে বোঝা যায় ছোটরা এই দৃশ্যটি খুব উপভোগ করেছে। তবে মূর্তি ভাঙার দৃশ্যে রাজার নিজের অংশগ্রহণ ছোটদের মনস্তত্বের দিক থেকে আমার নেতিবাচক বলেই মনে হয়েছে। রাজার শাস্তি হওয়ায় সমুচিত ছিল।

সত্যজিতের অপর দুটি ছোটদের ছবি তাঁরই সৃষ্ট ফেলুদা চরিত্রকে অবলম্বন করে মূলত কিশোরদের জন্য নির্মিত গোয়েন্দারহস্য। কিশোরমনে ভায়োলেন্সের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সত্যজিৎ সজাগ। বুদ্ধির জোর অর্থাৎ মগজাস্ত্র যার একটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে, তাই এই ধরনের কাহিনীতে অপরাধকে ধরতে সাহায্য করে।

“সোনার কেল্লা” ছবির কাহিনীর উৎস জাতিস্মর। এর অবশ্য খুব জোরালো কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায় নি। ছবিটি দেখতে কিশোরদের ভালো লাগবে কাহিনীর দুরন্ত গতি ও নৈসর্গিক দৃশ্যের জন্য। ভালো লাগবে লালমোহন বাবুকে। তাঁর মজার মজার সংলাপের জন্য। আর ফেলুদার বুদ্ধি ও জ্ঞানের পরিধি বিরাট। অনেক সময় আমার মনে হয় “ফেলুদা” হচ্ছে সত্যজিৎ রায়ের “অল্টার ইগো”। সেই বাগবৈদগ্ধ, সেই মেধার দ্যুতি আর চিন্তার পারম্পর্য। তাঁর কথাবার্তায় তোপসের সঙ্গে ছোটরাও প্রচুর কিছু জানতে পারে। সোনার কেল্লা ছবিটি শেষ পর্যন্ত ওই পূর্বজন্মের স্মৃতি বা জাতিস্বর তত্ত্বে ছোটদের বিশ্বাস ধরিয়ে দেয় না। কারন ওই ঘটনার মাধ্যমে ছবি শুরু হলেও ছবিটা চলে যায় রাজস্থানের নতুন নতুন জায়গায় নতুন নতুন রহস্যের জট ছাড়াতে।

“জয় বাবা ফেলুনাথ” ছবিটিতে কিন্তু শুধু অপরাধীদেরই খুঁজে বার করা হয় না। বকধার্মিকদের মুখোশও খুলে দেওয়া হয় ছবিটিতে। ভন্ড সাধুটির নাম মছলিবাবা কেননা সে নাকি সাঁতার কেটে কাশীতে এসেছিল। নামটায় যেমন ছোটরা মজা পাবে আবার নামটার মধ্য দিয়ে ছোটদের মনে একটা সন্দেহের বীজ অঙ্কুরিত হবে। কেননা নামটির সাথে কোথায় যেন বকধার্মিক কথাটির একটা মিল আছে। আর কাশীকে প্রেক্ষাপট হিসাবে বেছে নেওয়ার কারন মনে হয় ওখানেই বহু সাধু সন্ন্যাসীর নানারকম অলৌকিক কার্যকলাপের কথা শোনা যায়। মছলিবাবার স্বরূপ উদঘাটন করে সত্যজিৎ দেখালেন যে এসব ভন্ডরা শুধু প্রতারক নয়, এদের সঙ্গে under world এরও যোগ আছে। মগনলাল মেঘরাজ সেই under world এর মসিহা। বডি বিল্ডারের পেশির সঙ্গে মন্দিরের কারুকাজকে তুলনা করে তিনি মানুষের চিন্তা ও রুচি পরিবর্তনের বার্তা ঘোষণা করলেন।

সবশেষে সত্যজিৎ ষাটের দশকের গোড়ায় ১৬ মি.লি. ক্যামেরায় বিদেশী টেলিভিশনের জন্য “টু” বলে ২০ মিনিটের যে ছবিটি তোলেন তাঁর সম্বন্ধে আলোচনা করবো। ছবির দুটি মূল চরিত্রই শিশু। একটি শিশু ধনী যে প্রকান্ড অট্টালিকায় থাকে। আর অন্যজন দরিদ্র, সে অদূরে একটি কুঁড়ে ঘরে থাকে। এসব দ্বন্দ্ব (সত্যজিৎ যাকে খুনসুটি বলেছেন) এ ছবির প্রধান উপজীব্য। ছবিটিতে কোনো সংলাপ নেই। শুধু আছে সঙ্গীত।ধনী শিশুটির কাছে ঘরভর্তি নানারকম খেলনা আর দরিদ্র শিশুটির টুকিটাকি খেলনা ও একটি বাঁশি। দরিদ্র শিশুটি বাঁশি বাজায় আর তা দেখে ধনী শিশুটি ক্লারিওনেট বাজায়। এইভাবে চলে জারিজুরি খাটানোর প্রতিযোগিতা। শেষমেশ দরিদ্র ছেলেটি ঘুড়ি ওড়ায়। তখন বড়লোকের ছেলেটি এয়ারগান দিয়ে ঘুড়িটি ফাঁসিয়ে দেয়। আবার ধনী শিশুটির দম দেওয়া রোবটটি তার খেলাঘরটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এরপরেও দরিদ্র শিশুটি আবার তার বাঁশিতে সুর তুলেছে।তাকে যেন কোনোভাবেই হারানো যাচ্ছে না।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular