ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পরাজয় বাংলাদেশে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আর সেই বিতর্ক হল – বাংলাদেশ কি ভারত বিদ্বেষী? এই প্রশ্ন উঠছে কেননা, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পরাজয়ের পরেই বাংলাদেশের এক শ্রেণির মানুষকে আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। এরা সত্যিই ক্রিকেট প্রেমী না কি ভারত বিদ্বেষী?
এমন বিতর্কে বাংলাদেশের শুধু সাধারণ মানুষ নন, এমনকী বিশিষ্টরাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তাঁদেরই একজন বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তিনি ভারতের পরাজয় এবং বাংলাদেশের মানুষের উচ্ছ্বাস নিয়ে খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন। স্বীকার করে নিয়েছেন, বাংলাদেশে সত্যিই ভারত বিদ্বেষী মানুষ রয়েছে।
চঞ্চল চৌধুরীর কথায়, ‘‘এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে বাংলাদেশে ভারত বিদ্বেষীর সংখ্যা নেতাত কম নয়। সেটা রাজনীতি হোক কিংবা খেলাধুলো। সর্বক্ষেত্রেই এমন মানুষ রয়েছে।’’ তবে একই সঙ্গে বাংলাদেশী এই অভিনেতা একথাও বলেন, ‘‘আবার একথাও ঠিক বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ ভারতের সিনেমা ভালোবাসে, মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে মনে রাখে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে মনে রাখে না – তারা বংশ পরম্পরায় ভারত বিরোধী। তারা সব সময় পাকিস্তানের পক্ষে।’’
চঞ্চল চৌধুরী আরও বলেন, ‘একটা দেশে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ আছে। বাংলাদেশের বহু মানুষ এখনও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, অনেকে আবার সমর্থনও করে। আবার ভারত পাকিস্তান খেলা হলে অনেকে পাকিস্তানকেও সমর্থন করে।’’
যদিও তিনি এটাও দাবি করেন, এটা গোটা বাংলাদেশের ছবি নয়। যারা ভারত বিরোধী তারা ইন্ডিয়ার সমর্থন করেনি। চঞ্চল চৌধুরীর কথায়, ‘‘এমন নয় যে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষই ভারত বিদ্বেষী। এটা তো রাজনীতি অথবা খেলা সবক্ষেত্রেই হয়। হতে পারে ঢাকা ইউনিভার্সিটি চত্বরে যারা ছিল তারা হয়তো ভারত বিদ্বেষী। এখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে যারা পড়েন, সবাই কি আর ভারতকে সাপোর্ট করে? নিশ্চয়ই না, পাকিস্তানের সাপোর্টার আছে, অন্য দলের আছে।’
ভারতবিদ্বেষীদের কারণে দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কি না, এমন প্রশ্নে চঞ্চল বলেন, ‘‘আমি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ নই, ফলে এটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। যারা এসব নিয়ে চর্চা করেন, তারা বলতে পারবেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, ভারতে হারের ফলে যে ঘটনা বাংলাদেশে হয়েছে, তা একটা অংশের উচ্ছ্বাস। এটা দেশের সব মানুষের চিত্র নয়। আমি যাদেরকে দেখেছি তাদের অধিকাংশই ভারতের হারে কষ্ট পেয়েছে।’’