অনুপ চক্রবর্তী
চরিত্র- রুণা। অমিতাভ। অমিতাভর বাবা। হিতেশ। পিকু।
প্রথম দৃশ্য
(রুণার বেডরুমে রুণা। অন্য zonal আলোয় অমিতাভ। অমিতাভ অফিস থেকে ফোনে কথা বলছে ওর স্ত্রী রুণার সঙ্গে। সময় দুপুর একটা।)
(রুণার ফোনের রিংটোন)
রুণা।। হ্যালো। বলো।
অমিতাভ।। বাবাকে এই দুপুর একটার ওষুধটা খাইয়েছ?
রুণা।। আমাকে ফোন করে রিমাইন্ড করাচ্ছো কেন?
অমিতাভ।। মাঝে মাঝে ভুলে যাও তো। তিনটের সময়ের ওষুধটাও খাওয়াতে ভুলবে না। একদিন ভুলে গেছিলে।
রুণা।। দ্যাখো আমি তোমাদের বাড়ির নার্স নয়।
অমিতাভ।। এটা তোমার ডিউটি।
রুণা।। শুধু কি এবাড়িতে ডিউটি পালন করার জন্যে আমার বিয়ে হয়েছে?
অমিতাভ।। একটা ফ্যামিলির যারা মেম্বার তাদের সকলেরই কিছু কিছু মানবিক কর্তব্য থাকে।
রুণা।। ok । তাহলে আমার প্রতিও তোমার মানবিক কর্তব্য পালন করা উচিত।
অমিতাভ।। কী মানবিক কর্তব্যের কথা তুমি বলতে চাইছ জানতে পারি?
রুণা।। তোমার বাড়িতে তোমার একটা নার্স রাখা উচিত তোমার শয্যাশায়ী অসুস্থ বাবার কেয়ার নেওয়ার জন্যে। আমাকে এক্সপ্লয়েট না করে।
অমিতাভ।। একজন মানুষকে মনে করে ওষুধ খাওয়াতে বলাটা এক্সপ্লয়েট করা?
রুণা।। ইয়েস। আমি সবসময়ে অ্যালার্ট থাকতে পারব না। নার্স রাখবে।
অমিতাভ।। দুপুরে দুবার ওষুধ খাওয়ানোর জন্যে নার্স রাখতে বলছ? রামগতি সারাদিন বাবার পেচ্ছাপ পায়খানা ফেলে। বাবাকে চান করিয়ে দেয়। বাবাকে খাইয়ে দেয়। তোমাকে ওসব কিছুই করতে হয় না। কিন্তু ও লেখাপড়া জানে না। তাই ওকে দিয়ে আমি বাবাকে ওষুধ খাওয়াই না। ভুলভাল ওষুধ খাইয়ে দেবে। বাবাকে রাতের ওষুধটা আমিই খাইয়ে দিই। রুণা, তুমি আগে এরকম ছিলে না। রিসেন্টলি ভীষণ বদলে গেছ। কনজুগাল লাইফেও। প্রেজেন্টলি ইউ আর সারপ্রাইজিংলি ভেরি মাচ কোল্ড৷
রুণা।। হেল উইথ অল দিস। তুমি রাজারহাটের ফ্ল্যাটে শিফ্ট করো। আই ওন্ট স্টে হিয়ার।
অমিতাভ।। মানে?
রুণা।। মানে আবার কী? ফ্ল্যাটটা শুধু শুধু পড়ে রয়েছে?
অমিতাভ।। ফ্ল্যাটে শিফ্ট করতে বলছ কেন? তোমার বাবার কেনা বলে?
রুণা।। সেটা তুমি যাই ভাবো। আমার এখানে থাকতে ভালো লাগে না। রামগতি আছে। তুমি আর একটা নার্স রাখবে। আমি তোমার বাবার কেয়ার নিতে পারব না।
অমিতাভ।। তোমাকে কিছুই কেয়ার নিতে হয় না।
রুণা।। হ্যাঁ, হয়। দুবার হলেও মনে করে ওষুধ খাওয়াতে হয়। সেইজন্যে তুমি আমাকে চেজ করো। রামগতি সার্ভিস দিলেও আমাকে সবকিছু সুপারভাইস করতে হয়। তার ওপর তোমার বোনেরা মাঝে মাঝে এসে তোমার বাবাকে দেখাশোনার ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার করে। বড় বড় কথা বলে। আমি এসব টলারেট করতে পারব না।
অমিতাভ।। তোমাকে রাজারহাটের ফ্ল্যাটের চাবি দিয়ে দেব। পিকুকে নিয়ে কাল চলে যাবে।
রুণা।। তুমি যাবে না?
অমিতাভ।। না। আমি এখানে থাকব। আমার বাবার কেয়ার আমিই নেব। এখানে তোমার থাকতে অন্য কোন অসুবিধে হচ্ছে?
রুণা।। অন্য কোন অসুবিধে মানে?
অমিতাভ।। মানে বাড়িতে রামগতি থাকে। শয্যাশায়ী হলেও বাবা আছে। মাঝে মাঝে আমার বোনেরা এসে পড়ে। তোমার হয়ত নির্জনতার অভাবের কোন বিশেষ সমস্যা হয়।
রুণা।। কী বলতে চাইছ?
অমিতাভ।। হিতেশ দুপুরে প্রায়ই আসে। তাই না?
রুণা।। আসতেই পারে। এটা ওর মামার বাড়ি।
অমিতাভ।। ঠিক দুপুর বেলায় আসে। আমি যখন থাকি না। আমি পিকুর কাছে জানতে পারি।
রুণা।। কী বলতে চাইছ?
অমিতাভ।। কাল বালিশে দুএকটা বাদামী চুল ছিল। চুলটা আমার মাথার নয়৷
রুণা।। গো টু হেল।
অমিতাভ।। ইউ গো টু হেল।
রুণা।। এই শোনো।
অমিতাভ।। আমি রাখছি। কাজ আছে।
(পিকুর প্রবেশ)
পিকু।। কার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলে মা?
রুণা।। তোমার বাবার সঙ্গে।
পিকু।। বাবার সঙ্গে তোমার ঝগড়া হচ্ছিল?
রুণা।। হ্যাঁ।
পিকু।। বাবার সঙ্গে তোমার রোজ রোজ ঝগড়া হয় কেন মা?
রুণা।। আমার দোষ।
পিকু।। যাঃ। আমি কি তাই বললাম? তুমি খুউব ভালো।
(বাইরে গাড়ির আওয়াজ)
পিকু।। মা হিতেশ কাকু আসছে। আমার একদম ভালো লাগেনা হিতেশ কাকুকে।
রুণা।। কেন তোমাকে ও কত ভালোবাসে। কত কী খেলনা কিনে দেয়। কতরকমের চকলেট কিনে আনে তোমার জন্যে। কত কী গিফট দেয় তোমাকে।
পিকু।। কিন্তু ঠিক দুপুর বেলায় রোজ আসে। আমার সকালে ইস্কুল। সন্ধেবেলায় হোমটাস্ক করা। শুধু দুপুরবেলায় তোমার কাছে আমি গল্প শুনি। ঠিক সেইসময় হিতেশকাকু আসে।
রুণা।। তোমার হিতেশ কাকু রাতের বেলায় কাজ করে তো কল সেন্টারে। তাই দুপুরবেলায় গল্প করতে আসে।
পিকু।। আমি কখন তাহলে গল্প শুনব তোমার কাছে?
রুণা।। তোমাকে আমি রাতের বেলায় গল্প শোনাবো। হোমটাস্ক করার পরে। ডিনার করার আগে।
পিকু।। ঠিক বলছো মা? সত্যি?
রুণা।। সত্যি।
পিকু।। আমি কবে নতুন স্কুলে ভর্তি হব মা?
রুণা।। এইতো একমাস পরেই।
পিকু।। ওইটা মর্নিং স্কুল নয়, তাই না মা?
রুণা।। না। বেলায় স্কুল।
পিকু।। কী মজা। ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে যেতে হবে না।
হিতেশ।। আসতে পারি?
রুণা।। এসো।
হিতেশ।। পিকুবাবু, আজ তোমার জন্যে একটা দারুন জিনিস এনেছি।
পিকু।। কী এনেছ হিতেশকাকু? বন্দুক?
হিতেশ।। বন্দুকতো তোমার আছে। এটাও খুব ইন্টারেস্টিং জিনিস। এই দেখো। রং পেন্সিল।
পিকু।। রং পেন্সিল?
হিতেশ।। হ্যাঁ অনেক রকমের কালার। আর এই হলো ড্রইং খাতা। তুমি অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকবে।
পিকু।। কী মজা। ভালোই হয়েছে। আমার প্যাস্টেলে আঁকতে ভালো লাগে না।
রুণা।। তাহলে পিকুসোনা তুমি একটা একটা মজার খেলা করো। আমাদের নিচের বাগানে নানা রঙের ফুলের গাছ আছে।
পিকু।। হ্যাঁ। অনেক রকমের রঙের ফুল ফুটে আছে বাগানে।
রুণা।। তুমি ড্রইং খাতার প্রত্যেক পাতায় একটা করে খুব যত্ন করে ওই বিভিন্ন রঙের ফুলের ছবি আঁকো। দেখব তুমি দু ঘন্টায় কতগুলো ফুলের ছবি আঁকতে পারো। দুঘন্টা পরে তিনটের সময় তোমাকে দুধ খাওয়ার জন্য ডাকব। আমি ততক্ষণ হিতেশ কাপুর সঙ্গে গল্প করি।
পিকু।। ঠিক আছে আমি এখনই যাই। দেখবে দু’ঘণ্টায় আমি কতগুলো দারুণ ফুলের ছবি আঁকি নানা রঙের। হিপ হিপ হুররে। (পিকুর প্রস্থান)
রুণা।। ও বুঝতে পেরেছে।
হিতেশ।। কে? পিকু?
রুণা।। না। পিকুর বাবা। কাল বালিশে তোমার মাথার চুল ছিল। ব্ৰাউন চুল।
হিতেশ।। তারপর? আর কিছু বলেনি?
রুণা।। একটু আগে ফোনে কথা বলছিল। তুমি রোজ দুপুরে আসো ও জানে। পিকু গল্প করতে গিয়ে মনে হয় বলেছে।
হিতেশ।। মামার বাড়ি আসতেই পারি।
রুণা।। কিন্তু আসো মামাতো বৌদির কাছে। কিছু কথাকাটির পরে ওই চুলের কথা বলে ফোন কেটে দিল।
হিতেশ।। তাহলে এবার থেকে আমরা বাইরে মিট করব।
রুণা।। হিতেশ আমাদের এই গোপন সম্পর্কটা আজকেই শেষ হোক।
হিতেশ।। কেন? ওর ভয়ে?
রুণা।। আমি আর ইনভল্ড থাকতে চাই না । আই শ্যুড নট।
হিতেশ।। আমি একা তোমাকে ইনভলভ করিনি। দুজনেরই দায় আছে।
রুণা।। আমি তো অস্বীকার করছি না। কিন্তু আমি আর কন্টিনিউ করতে চাই না। একটা বিশেষ দুর্বল মুহূর্তে তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম। আমরা জড়িয়ে গেলাম। যেটা শারীরিক সম্পর্কে পৌঁছে গেল৷ কিন্তু আর নয়। এক্সট্রাম্যারিটাল রিলেশান আমি আর চাইছি না।
হিতেশ।। কেন পরকীয়া প্রেম তো এখন আইনবিরুদ্ধ নয়।
রুণা।। আইনের কথা নয়। আমার বিবেক চাইছে না। অমিতাভর ব্যাপারে আমার কোন ফিলিং নেই। কিন্তু পিকুর মুখের দিকে তাকালে আমার অপরাধবোধ হয়। এই এক্সট্রাম্যারিটাল রিলেশন আইনের কাছে অপরাধ না হলেও আমার বিবেকের কাছে অপরাধ হচ্ছে।
হিতেশ।। সিলি। এসব পুরোনো অচল সেন্টিমেন্ট।
রুণা।। পিকু বড় হয়ে জানতে পারলে?
হিতেশ।। মেনে নেবে। এযুগের ছেলে।
রুণা।। অমিতাভ মেনে নেবে কেন যখন সিওর হবে? কতদিন লুকিয়েচুরিয়ে চলবে? একদিন ডিভোর্স চাইবে। যখন সিওর হবে।
হিতেশ।। তুমি তখন ডিভোর্সে রাজী হয়ে যাবে। আমরা বিয়ে করব।
রুণা।। আমি ওকে ডিভোর্স করতে চাইছি না।
হিতেশ।। কেন? এইতো বললে ওর ব্যাপারে তোমার কোন ফিলিং নেই।
রুণা।। হ্যাঁ। নেই। তোমার প্রেমে পড়ার পর ওর ব্যাপারে আমার ফিলিং চলে গেছে। একইসঙ্গে দুজনের প্রতি প্রেম থাকে না। কিন্তু ওর সঙ্গে আমার ডিভোর্স হলে পিকুটা ভেসেযাবে। পিকুর মনের ওপর ভীষণ এফেক্ট হবে। পিকুর ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি ছেলের ক্ষতি সইতে পারব না।
হিতেশ।। এসব শোনার জন্যে কি আমি এখন এসেছি? নাকি অভিসারে এসেছি? আমি তাহলে চলে যাই।
রুণা।। না। যেও না। হিতেশ, আমার দিকে ওভাবে তাকিও না। তোমার ওই দৃষ্টি আমি সহ্য করতে পারি না। আমাকে পাগল করে দেয় তোমার ওই তাকানো। হিতেশ (কেঁদে ফেলে) তোমাকে – তোমাকে হারিয়ে আমি বাঁচবো না…..
হিতেশ।। রুনা, চলো সোনা। আমরা বেড রুমে যাই।
রুণা।। হ্যাঁ। চলো হিতেশ বেডরুমে। আমি আর পারছিনা। আমাকে তুমি নিংড়ে শেষ করে দাও। শেষ করে দাও আমাকে। আমি শুধুই তোমার। তুমি শুধুই আমার। আমি তোমার তোমার তোমার……
পিকু।। (নেপথ্যে) ইস। কী সুন্দর সব ছবিগুলো আঁকা হয়েছে। কী দারুণ সব ফুল এঁকেছি। অনেক রকমের রঙের ফুল আঁকলাম। কত নানা রকম রংয়ের। লাল নীল গোলাপি হলুদ সবুজ বেগুনি। আরে এই ফুলটা সাদা। সাদা রঙের ফুল আঁকতে হবে তাহলে। সাদা রঙের পেন্সিল তো নেই। তাহলে কি করব? মাকে জিজ্ঞেস করি। (নীচের থেকে চিৎকার করে) মা! মা! সাদা রং পেন্সিল নেই। তাহলে সাদা রঙের ফুল কী করে আঁকব? বল। মা? মা? শুনতে পাচ্ছ? উত্তর দিচ্ছ না কেন?
রুণা।। হিতেশ, পিকু ডাকছে। ছেড়ে দাও আমাকে। ছেড়ে দাও।
হিতেশ।। কী বলছ তুমি? ছেড়ে দিতে বলছ? এখনো তো শুরুই হলো না কিছু। এখনই ছেড়ে দিতে বলছ?
রুণা।। হ্যাঁ। পিকু ডাকছে। আমার ভালো লাগছে না।
হিতেশ।। না। আমি ছাড়বো না। আমি ছাড়বো না তোমাকে।
পিকু।। (নেপথ্যে) মা উত্তর দিচ্ছে না। তাহলেএকছুট্টে ওপরে গিয়ে মাকে জিজ্ঞেস করি।
রুণা।। তুমি কিন্তু আমার ওপর ফোর্স করছ হিতেশ। দিস ইজ রেপ। আমার এখন এসব করতে ভালো লাগছে না। ছেড়ে দাও আমাকে। ছাড়ো।
হিতেশ।। OKI এরকম জানলে আমি আসতাম না। তুমি আমাকে হ্যারাস করলে।
(পিকু ‘মা’ বলে ডেকে উঠে দরজায় ধাক্কা মারে। ‘দূর হও’ বলে কেঁদে ওঠে।)
রুনা।। (চাপা গলায়) পিকু দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে। চুপ করো। আমি দরজা খুলছি।
(দরজা খোলার আওয়াজ)
রুনা।। পিকু । পিকু সোনা।
পিকু।। তুমি দুষ্টু। দুষ্টু। দুষ্টু।
(পিকু ডুকরে কেঁদে ওঠে। কাঁদতেই থাকে। রুণাও হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকে।)
রুনা।। পিকু! পিকু! পিকু শোন। যাস না শোন। শোন। শোন। একী! পিকু দৌড়ে নীচে চলে গেল। ও নিশ্চয় সব বুঝতে পেরেছে। (হিতেশকে) তুমি আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিলে। (ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে)
হিতেশ।। রুনা, বাজে কথা বলবে না। হিপোক্রিটের মতো আমাকে accuse করবে না।
রুনা।। তুমি আমাকে দিনের পর দিন সিডিউস করে নষ্ট করেছ। আমাকে corrupt করেছ। ইউ আর দ্য লেডি কিলার। স্কাউন্ড্রেল।
হিতেশ।। শাট আপ। আমাকে অ্যাবিউজ করবে না। তুমিও আমাকে allure করেছ। একহাতে তালি বেজেঝে,না? ন্যাকা? তোমার দায় নেই? একজন হাউসওয়াইফ হয়ে দিনের পর দিন আমার সঙ্গে কনশাসলি সহবাস করেছ স্বামীর অনুপস্থিতিতে। তুমি খুব সাধুপুরুষ? আমি একাই ভিলেন হয়ে গেলাম?
রুনা।। আমি তোমার সঙ্গে আর কোনদিন একমুহূর্তের জন্যেও কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না। আমাকে মুক্তি দাও। আমাকে বাঁচতে দাও। আমাকে ফিরতে দাও। তুমি আর কখনো এখানে আসবে না। কখনো আমাকে ফোন বা মেসেজ করবে না।
হিতেশ।। ok ok never never …. That’s all…. That’s enough… Hell with all these…. I hate you…… Rubbish… ( গট গট করে চলে যায়)
(রুনা ফুঁপিয়ে কেঁদে চলে। মিউজিক। নীরবতা। কিছুক্ষণ সময় চলে যায়। নীচে গাড়ির আওয়াজ। অমিতাভ ফেরে।)
দ্বিতীয় দৃশ্য
(অমিতাভর বাবার ঘর)
অমিতাভ।। বাবা, তুমি আমাকে মিস কল দিয়েছিলে কেন বাবা? শরীর খারাপ লাগছিল?
বাবা।। হাঁ, অমিত। বুকে একটু ব্যথা করছিল। ভয় পেয়ে তোমাকে মিস কল করেছিলাম। অন্যায় হয়েছে আমার। তুমি কাজের মানুষ। তোমাকে অফিস থেকে টেনে আনা উচিত হয় নি আমার ।
অমিতাভ।। তাতে কী হয়েছে। ইমার্জেন্সি পারপাসে বেরোতেই পারি।
বাবা।। আসলে বেল বাজিয়ে ওপর থেকে বৌমাকে ডেকে আনতে চাইনি। সবইতো বোঝো। (কেঁদে ফেলে)
অমিতাভ।। আহা। তুমি বাচ্ছার মতো কাঁদছ কেন? আমিতো এসে গেছি। এখন কেমন ফীল করছ? এখনও বুকে ব্যথা করছে?
বাবা।। না। এখন ভাল আছি।
অমিতাভ।। প্রদীপকে একবার কল করব। ইসিজিটা করিয়ে নেব। বুকে ব্যথা হল যখন৷
বাবা।। তুমি বৌমাকে কিছু বোলো না। অশান্তি কোরো না বাবা আমার জন্যে।
অমিতাভ।। না। না। ঠিক আছে। ঠিক আছে। চিন্তা কোরো না। আমি এখন ওপরে যাচ্ছি। একটু পরে আমার আসব। (প্রস্থান)
তৃতীয় দৃশ্য
রুনা।। তুমি?
অমিতাভ।। কেন? অসুবিধে হয়ে গেল?
রুনা।। কী বলছ তুমি?
অমিতাভ।। বাবার বুকে ব্যথা করছিল। আমাকে মিসকল দিয়েছিল। এমনই মানসিক দূরত্ব তোমার সঙ্গে যে তোমাকে ডাকতে পারেনি।
রুনা।। অমিত। অমিত। আমাকে ক্ষমা করো। আমি বাঁচতে চাই। আমি বাঁচতে চাই তোমাকে নিয়ে। তোমাদের নিয়ে। আমি ফিরতে চাই। আমি আবার তোমার সেই হারিয়ে যাওয়া রুনা হতে চাই।আমি আবার ফিরে পাচ্ছি নিজেকে। আমি আবার ফিরে পাচ্ছি তোমাকে। ক্ষমা করো আমাকে অমিত। ক্ষমা করো। আমাকে ক্ষমা করবে না তুমি? অমিত। অমিত। অমিত।
অমিতাভ।। কেউ যদি অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরতে চায়, আমি সর্বদাই তার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিই রুনা। অতীতের সাময়িক অন্ধকারকে ভুলে যাই। শুরু করি গোড়া থেকে। নতুন ভাবে। অ্যাব ইনিশিও (AB INITIO) দে নোভো (DE NOVO)
সমাপ্ত