Saturday, May 31, 2025
Saturday, May 31, 2025
Homeনাট্য সাহিত্যনাটক : এক‌ ফৌজির গল্প

নাটক : এক‌ ফৌজির গল্প

সুব্রত কাঞ্জিলাল

চরিত্র: নেহাল সিং/ ইকবাল সিং/ রঞ্জিত সিং/ রেশমা/ বিজয়/ দারোগাবাবু/ সেই মেয়েটা (কাশ্মীরি)

(পরবর্তী অংশ)

মেয়েটা।। কাশ্মীরি দেহাতি মেয়ে। ভেড়া চড়াতে

গিয়ে আমিও ঝড়ের মধ্যে পড়ে গেছিলাম। ভেড়াগুলো

কোথায় যে গেল কে জানে। আর তখন তোমাকে দেখলাম বরফ এর উপর জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছো।

টানতে টানতে এখানে নিয়ে এলাম। নইলে তো মরে যেতে।

নিহাল।। (দুধ খেয়ে) তুমি কোন দেশের মেয়ে? ইন্ডিয়ান?

মেয়েটা।। বললাম তো কাশ্মিরি। এটা বুঝি পছন্দ হলো না?

নিহাল।। মানে মুসলমান?

মেয়েটা।।কিভাবে বুঝলে? এই কাশ্মীরে আমার মত পোশাক হিন্দু-মুসলমান সবাই পারে।

নিহাল।। আমি শিখ পাঞ্জাবী—-

মেয়েটা।। তুমি ওভাবে একা তুষার ঝড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলে কেন?

নিহাল।। ডিউটি করছিলাম। সীমান্ত পাহারা দিচ্ছিলাম।

মেয়েটা।। তোমার সঙ্গীরা কোথায়? চারদিক থেকে গুলি চলছিল। তুমিতো গুলিতে ঝাজরা হয়ে যেতে।

ভাগ্যিস তুষার ঝড়ে ছিটকে গিয়েছিলে সামনের একটা খাদের মধ্যে—–

নিহাল।। হ্যাঁ হ্যাঁ! এবার মনে পড়েছে! আমার মনে হয়েছিল আমি আর বেঁচে নেই—

মেয়েটা।। তুমি তো মরেই যাচ্ছিলে। ভাগ্যিস আমার চোখে পড়ে গেল। আমার মনে হয় তোমার সঙ্গীরা মানে যাদের সঙ্গে চাকরি করো তারাও তুষার ঝড়ে বিভিন্ন দিকে ছিটকে পড়েছে। গত বছর ও এরকম ঘটনা নিজের চোখে দেখেছি।

নিহাল।। কত বছর আমি এখানে ছিলাম না। এই বছর আমার পোস্টিং হয়েছে এখানে।

মেয়েটা।। তুষার ঝড়ে উড়ে গিয়ে তোমার মতন কয়েকজন হিন্দুস্তানি ফৌজি পাকিস্তানের দিকের গ্রামে পড়েছিল। একই রকম ঘটনা ঘটেছিল তোমাদের  দিকেও। বেশ কয়েক মাস পরে তারা আবার নিজের নিজের দেশে ফিরে গিয়েছিল।

নিহাল।। এখানে আসবার পর এরকম ঘটনা আমি অনেকের মুখে শুনেছি। হিন্দুস্তানী ফৌজের যে কজন ফিরে এসেছিল তাদের চাকরি চলে গিয়েছিল।

মেয়েটা।। একটা কথা বলব?  আমার তো মনে হচ্ছে তুমি ফিরে গেলে তোমারও চাকরি থাকবে না।

নিহাল।। কিন্তু কেন থাকবে না? কি এমন অপরাধ করেছি আমি!

মেয়েটা।। এই কথাটাই তো সহজ প্রশ্ন।

পাশের বাড়ির সঙ্গে কেউ কি ঝগড়া করে? মাঝে মাঝে অবশ্য ঝগড়া হয়! সে তো নিজেদের পরিবারের মধ্যেও হয়! আবার ঝগড়া মিটে যায়! ভাব ভালবাসা হয়! তাই বলছিলাম, পাশের বাড়ির সঙ্গে ঝগড়া মিটিয়ে নেওয়া যায় না? তাহলে তো সীমানা নিয়ে এত দুশ্চিন্তা হয় না। কারোর চাকরি যাবে না।

সীমানা পাহারা দেবার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচা করা, তারপর মাঝে মাঝে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা! কোটি কোটি টাকা পানিতে চলে যায়। বেঘোরে কত মানুষ মারা যায়। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। তার চেয়ে বন্ধুত্ব বাঁচিয়ে রাখলে ভালো হয় না?

নেহাল।। এসব তো রাজনীতির কথা। আমরা ফৌজি রাজনীতি করি না।

মেয়েটা।। (হাসি) তোমরা ফৌজি। তোমরা জানো, মালিকের হুকুম তামিল করতে। বন্দুক চালাতে। ভাইয়ের বুকের খুন নিয়ে হোলি খেলতে।

নিহাল।। এসব কথা আমাকে বলছ কেন?

মেয়েটা।। শুধু তোমাকে বলছি ভেবোনা। তোমাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে যখন দেখা হয়, তখন অন্যদেরও বলি।

নিহাল।। দেখা হয় মানে? তুমি ইন্ডিয়ার সীমান্তে চলে যাও?

মেয়েটা।। আমি যাব কেন। আমার ভেড়া গুলো চলে যায়। ওরা তো আর সীমানা সীমান্ত এসব বোঝে না ।

তখন আমাকেও ভেড়াগুলোর পিছন পিছন যেতে হয়।

তোমাদের ইন্ডিয়ান ফৌজিদের অনেকের সঙ্গে তখন আমার দেখা হয়। ভেড়ার দুধ খেতে চায়। ‌ আমি ভেড়ার দুধের চা বানিয়ে খাওয়াই। ওদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায়, কবে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা হবে। আমাদের এদিকের অনেক গ্রাম আছে, যেখানে মাঝে মাঝে তোমাদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার সময় গোলা বারুদে ঘরবাড়িগুলোকে ঝলসে দেয়।  তাই আগে থেকে গ্রামের লোকজনদের জানিয়ে রাখতে হয়। যাতে পালাবার সময় পায় ওরা।

নিহাল।। তোমার গ্রাম কোনটা? কোথায় থাকো তুমি?

মেয়েটা।। আগে তো তোমাদের দিকে ছিল। আমার এক চাচার কাছে শুনেছি, আমার জন্ম ইন্ডিয়াতে। আমরা সবাই ওদিকেই ছিলাম। আমার চাচা বলত, দাদাজিও বলতো, সীমানা বলে কিছু হয় না। এখানে যারা থাকে, এখানকার গ্রামের লোক গুলো তারাও জানে। এখানে কোন সীমানা নেই। রাস্তাঘাট নেই। হাট বাজার নেই। স্কুল-কলেজ নেই। আছে শুধু পাইন গাছ। তুষার ঝড়। আর আমরা। অবশ্য ডজন ডজন ভেড়ার পাল ও আছে। খচ্চরের সংখ্যাটাও কম না।

নেহাল।। এরকম জায়গায় তোমরাই বা কি করে আছো এখানে? কেন আছো?

মেয়েটা।। আমরা আছি মানে জন্ম জন্মান্তর থেকে আছি। তবে শীতের দিনে এখানে থাকা যায় না। তখন পুবে পশ্চিমে চলে যেতে হয়। এখন তুমি কি ভাবছো? কোথায় যাবে?

নিহাল।। ফিরে যেতে হবে। আমার অফিসে রিপোর্ট করতে হবে।

মেয়েটা।। কোথায় অফিস? আমার তো মনে হল তুষারে সব চাপা পড়ে গেছে! যারা বেঁচে ছিল তারা নানাদিকে পালিয়েছে।

নিহাল।। তবুও আমাকে যেতে হবে। আমার অফিসের লোকজনদের খুঁজে বার করতে হবে।

মেয়েটা।। এখানকার পথঘাট জানা আছে? আমার তো মনে হয় না! ভুল পথে যদি চলে যাও, তখন তুমিও আগের মত আবার বরফ চাপা পড়ে থাকবে।

তার চেয়ে বরং আমার সঙ্গে চলো। আমি তোমাকে আমাদের ওদিকে নিয়ে যেতে পারি। ওখানে শীতকালটা কাটিয়ে তারপর না হয়—-

নিহাল।। কিন্তু আমাকে ওরা খুঁজে না পেলে,-

মেয়েটা।। কি আর হবে? ওরা ভাববে তুমি বরফ চাপা পড়েছ! নইলে অন্যদের মত নিরুদ্দেশ হয়ে গেছো। তোমার বাড়ির লোকেরা অবশ্য তোমার জন্য খুব চিন্তা করবে। এ বছর শীতকালটা বোধহয় একটু বেশি সময় ধরে থাকবে। আমার কথা শোনো। আমার সঙ্গে চলো। আবহাওয়া এখন একটু ভালো আছে। এর মধ্যে যদি আমাদের গ্রামের রাস্তা ধরতে পারি, প্রাণে বেঁচে যাবে! জাত ধর্ম যুদ্ধ ওসব পরে ভাবা যাবে। আগে তো বেঁচে থাকা। এবার আমরা দেখব বরফের স্তুপ এর মধ্য দিয়ে ওরা দুজন এগিয়ে চলেছে। অন্ধকার মঞ্চে নেহালের কথা শোনা যাবে।

নেহাল।। আমরা শেষ পর্যন্ত মেয়েটার গ্রামে গিয়ে পৌঁছতে পেরেছিলাম। গ্রামটা পাহাড়ের অনেক নিচের দিকে। একটা নদীর কোল ঘেঁষে সুন্দর গ্রাম। সীমান্তের ঐরকম ভয়ংকর ঠান্ডার মধ্যে ডিউটি করতে করতে অনেক ফৌজির নিউমোনিয়া হয়। আমারও হয়েছিল। শহরের দামি ডাক্তারের দামি ওষুধ পত্র আমার ভাগ্যে জোটেনি। কিন্তু ওখানকার কবিরাজদের ওষুধে আমি বেঁচে গিয়েছিলাম। গ্রীষ্মকাল আসবার পরেও আমাকে আরো কিছুদিন থেকে যেতে হয়েছিল। কারণ শরীরে জোর ছিল না। আগের মতন স্বচ্ছন্দে হাঁটাচলা করতে পারতাম না। তাছাড়া ওই মেয়েটাই আমাকে আমার ভালোর জন্য আটকে রেখেছিল। ততদিনে বছর পার হয়ে গেছে। নতুন বসন্ত ঋতুতে ওই মেয়েটা আবার বেরিয়ে পড়ছিল ভেড়া চড়াতে। ওর সঙ্গে আমিও বেরিয়ে পড়েছিলাম। সীমান্ত পেরিয়ে একটা ফৌজি ট্রাক দেখতে পেয়ে  শ্রীনগরে আসতে পেরেছিলাম। ‌ সে সময় আমার কাছে না ছিল টাকা পয়সা, কোনরকম কাগজপত্র। আমি যে নিহাল সিং, পাঞ্জাব রেজিমেন্ট এর একজন ফৌজি , ইন্ডিয়ার একজন নাগরিক, এসব প্রমাণ করবার কোন উপায় ছিল না আমার কাছে। কিভাবে যে তখন আমার জীবন কেটেছে!!!! তবে ভাগ্য ভালো, শ্রীনগরের একটা মসজিদে ওখানকার একজন দরিদ্র ইমামের দয়ায় মাথা গোজার একটা ঠাঁই পেয়েছিলাম। দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থাও তিনি করে দিয়েছিলেন। ওরাই আমাকে কিছু টাকা দেয়। তারপর বলে তুমি নিজের গ্রামে চলে যাও।

ফ্ল্যাশব্যাক অফ। আগের দৃশ্যে ফিরে আসবো আমরা।

ইকবাল।। এসব কথা কেউ বিশ্বাস করবে না পুত্তার। সবাই বলবে বাকওয়াশ।

রেশমি।। আমারও তাই মনে হয় বাবুজি। নাটক নভেল সিনেমাতে এরকম গল্প পাওয়া যায়। ওরা চাইবে প্রমাণ। ওরা চাইবে আনুগত্য। ওরা চাইবে —–

ইকবাল।। এটা একটা নিছক গল্প। এই গল্প মিডিয়া বিশ্বাস করবে না। প্রশাসন বিশ্বাস করবে না। সরকার বিশ্বাস করবে না। ওরা বলবে নিজের অপরাধ আড়াল করার জন্য এই গল্প বানানো হয়েছে। তারচেয়ে বরং তুমি এখান থেকে চলে যাও। তোমার জন্য আমরা আর ঝামেলায় পড়তে চাই না (ভেতরে চলে যাবে)

নিহাল।। তুমিও কি বাবার মতন আমাকে বলবে—–

রেশমা।। সেই মেয়েটার সঙ্গে ভালোই তো ছিলে। কেন এলে আমাদের এই সভ্য জগতে?

নিহাল।। রেশমা তুমিও———

রেশমা।। কাশ্মীরের সেই সুন্দরী মেয়েটা ‌ তোমাকে নতুন জীবন দিয়েছিল। যদি পারো আবার তুমি সেখানেই চলে যাও। তাতেই তোমার মঙ্গল। আমাদের মঙ্গল!!!

রেশমা ও ভেতরে চলে যাবে।

নিহাল সিং একা দাঁড়িয়ে থাকে মাঝরাতের নিকষ কালো অন্ধকারের মধ্যে। আকাশের দিকে মুখ তুলে বলে—–

নিহাল।। আমার নিজের পরিবারের কাছেও আজ আমার কোন প্রয়োজন নেই। বিপন্ন হয়ে গেল আমার অস্তিত্ব! আমার দেশে আমি এখন মুর্দা ইনসান? কিংবা নিরুদ্দিষ্ট এক ফৌজি। যে বছরের পর বছর নিষ্ঠার সঙ্গে সীমান্ত পাহারা দিতে গিয়ে তুষার ঝড়ে হারিয়ে গেছে। তার শরীরটা বরফের মতো জমাট বেধে গেছে।

অন্তর্ভেদি হাহাকার করতে করতে নেহাল সিং অদৃশ্য হয়ে যাবে।সকালের সূর্য উঠবে। প্রথম দৃশ্যের মতো আবার এই বাড়ির মানুষগুলো কর্ম চঞ্চল হয়ে উঠবে। প্রথম দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

ইকবাল।। আজও কি ট্রাকটার আসবে না? আর কতদিন এভাবে ঘরে বসে থাকবি?

রঞ্জিত।। আমি তো আগেই বলেছিলাম বাবুজি, ইনস্টলমেন্টে একটা ট্রাক্টর কিনে নিন। ভাড়া খাটিয়ে ইনস্টলমেন্টের টাকা শোধ করা হয়ে যাবে।

রেশমা।। বাবুজি আপনাদের নাস্তা পানি তৈয়ার আছে। বলেন তো এখানে নাস্তা লাগিয়ে দিই?

রঞ্জিত।। আমাকে আজকে লুধিয়ানা যেতে হবে বাবু জী। আপনি ঘরে থাকুন। আম্মার দাওয়া আসবার সময় নিয়ে আসবো।

ইকবাল।। মনে হচ্ছে আজকে দারোগা সাহেব একটা খবর নিয়ে আসবে।

রঞ্জিত।। আপনাকে ফোন করে জানিয়েছিল?

ইকবাল।। হ্যাঁ। মনে হচ্ছে নিহালের ব্যাপারে আজকে একটা কংক্রিট খবর পাওয়া যাবে। ঠিক এই সময় বাইরে গাড়ি এসে দাঁড়াবে। সেখান থেকে দারোগা সাহেব নেমে আসবে।

ইকবাল।। আসুন আসুন দারোগা সাহেব। আপনার কথাই হচ্ছিল।

দারোগা।। আপনাদের বাড়িতে টিভি আছে?

ইকবাল।। টিভি তো আছে দারোগা বাবু, লেকিন সুইচ অন করবার লোক নেই।

রঞ্জিত।। হঠাৎ টিভির কথা কেন বলছেন দারোগা বাবু?

ইকবাল।। বেটি, দারোগা বাবুর জন্য শরবতের ইন্তেজাম করো।

দারোগা।। অন্য একদিন এসে শরবত কেন, আপনার বহু বেটির হাতের রান্না খেয়ে যাব। আজকে জলদি আছে। এখনই চলে যেতে হবে।

নেহাল এর খবরটা কদিন ধরে টিভিতে দেখাচ্ছে তো।

ইকবাল।। টিভিতে নিহাল —আমার পুত্তার!

রঞ্জিত।। কি দেখাচ্ছে দারোগাবাবু? দাদার খবর পাওয়া গেছে?

দারোগা।। ওদের অফিস থেকে অনেক খোঁজখবর করে বডি পাওয়া গেছে। তুষার ঝড়ের মধ্যে আরও অনেক ফৌজির মত চাপা পড়েছিল। ডেড বডি গুলো উদ্ধার করা গেছে।

ইকবাল।। সে কি!!!

রেশমা।। তাহলে—-

দারোগা।। অফিস যখন ডেড বডি খুঁজে পেয়েছে তখন ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করে দিতে আর কোন বাধা থাকবে না। আপনার ছেলের টাকা পয়সা যা সব পাওনা আছে এবার আপনারা সব পেয়ে যাবেন। এই সংবাদটা দিতে আপনার কাছে এলাম। আপনাকে টেলিফোন করে জানিয়ে দেবো কবে আপনাকে আবার কোতোয়ালিতে আসতে হবে। আজ তাহলে চলি।

দারোগা চলে যাবে।

রঞ্জিত।। তাহলে আর দুশ্চিন্তা কি বাবুজি—-তোমার ট্রাক্টর কিনবার টাকা তো এসে যাচ্ছে। কি বলো ভাবিজি? এতদিনে একটা দুশ্চিন্তার ফয়সালা হয়ে গেল।

ইকবাল।। টাকা পয়সার ব্যাপারটা তো ঠিক হল। কিন্তু তাহলে এতদিন আমার ছেলেটার নামে বেইমান গাদ্দার প্রচার করা হচ্ছিল কেন? কেন একটা বেকসুর ছেলের নামে কলঙ্ক রটান চলছিল?

রঞ্জিত।। ওসব ভেবে এখন আর কোন লাভ নেই বাবু জী। এখন পরের কথা ভাবুন। টাকা পয়সাগুলো কিভাবে ইনভেস্ট করা যায়—-

ইকবাল।। আমার ছেলেকে বদনাম করলো, আর আমি চুপ করে থাকব!!!

রঞ্জিত।। এটাই তো নিয়ম বাবুজি। আমরা আর কি করতে পারি বলো?

রেশমা।। তাহলে কাল কে এসেছিল?

ইকবাল।। কালকে? কখন বেটি? কার কথা বলছিস?

রেশমা।। আপনিও তো ছিলেন—–তার সঙ্গে কথা বললেন!

ইকবাল।। আমি কথা বললাম? কার সঙ্গে কথা বললাম? কার কথা বলছো বহু?

রেশমা।। কাল মাঝরাতে। আমার ঘুম আসছিল না।

বাইরে চলে এলাম। আপনিও এলেন——

ইকবাল।। কি যা তা কথা বলছো তুমি। আমার তো কিছু মনে নেই।

রেশমা।। আমার সব কথা মনে আছে।

রঞ্জিত।। কি কথা মনে আছে ভাবিজি? কার কথা? কে এসেছিল মাঝ রাতে? কোথায় এসেছিল? আমি তো কালকে রাত্রে এই খাটে শুয়েছিলাম। আমি তো কিছু দেখিনি।

রেশমা।। আপনার ছেলে মরেনি বাবুজি। বেঁচে আছে।

ইকবাল।। বেঁচে আছে?

রঞ্জিত।। কোথায় আছে? বল ভাবিজি কোথায় আছে? কিভাবে বেঁচে আছে? তোমার সঙ্গে তো তার দেখা হয়েছিল? কোথায় দেখা হয়েছিল? চুপ করে না থেকে বলো কোথায়? যদি বেঁচেই থাকে তাহলে তাকে মুরদা বলে ঘোষণা করে টিভিতে নিউজ করা হচ্ছে কেন?

রেশমা।। আমি জানিনা জানিনা, জানিনা।। কেন ওরা একবার আমার স্বামীর নামে কলঙ্ক রটিয়ে দিয়েছিল। তারপর আবার এখন বলছে সে মারা গেছে। পাওনা টাকা পয়সা সব পাঠিয়ে দেবে। আমি শুধু একটা কথাই জানি, আমার স্বামী মারা যায়নি। আমার স্বামী বেঁচে আছে। হ্যাঁ হ্যাঁ বেঁচে আছে।

সমাপ্ত

বি। দ্র। নাট্যকারের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই নাটক অভিনয় করা যাবে না। সেটা হবে দণ্ডনীয় অপরাধ!

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular