নিজস্ব সংবাদদাতা
ফিল্মি জগতে আবার শোকের ছায়া৷ গত ২১শে নভেম্বর কোঝিকোড়ের একটি বেসরকারী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মালয়ালম জনপ্রিয় অভিনেতা মেঘনাথন। ফুসফুস সংক্রমনের কারণে ভর্তি করা হয়েছিল কোঝিকোড়ের একটি বেসরকারী হাসপাতালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয় হয়েছিল ৬০ বছর। বিনোদন জগত এহেন এক অভিনেতার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ।
জনপ্রিয় ও প্রবীণ অভিনেতা সারদা নায়ার ও বালান কে নায়ারের তৃতীয় পুত্র মেঘনাথন। কেরালার তিরুবনন্তপুরমে জন্মগ্রহণ করেন। মেঘনাথন মালায়ালাম সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির একজন অতি সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। মৃত্যুকালে কন্যা পার্বতী ও স্ত্রী সুস্মিতাকে রেখে গেছেন।
কে এই মেঘনাথন?
মেঘনাথনরা মোট পাঁচ ভাই-বোন ছিলেন। দুই ভাই অনিল এবং অজয়কুমার এবং দুই বোন লতা এবং সুজাতা। চেন্নাইয়ের আসান মেমোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশনে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। অভিনেতা অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা করার জন্য কোয়েম্বাটোরে চলে যান। তিনি শেষ পর্যন্ত পালাক্কাদের শোরানুরে বৃহ নির্মান করে স্থায়ী বসবাস করেন।
মালয়ালম সিনেমায় মেঘনাথনের যাত্রা
পেশাদার ক্ষেত্রে, মেঘনাথন ১৯৮৩ সালে চলচ্চিত্র, ‘আশ্রম’-এর মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। যেখানে প্রধান ভূমিকায় ভরথ গোপী, মামুটি, মোহনলাল, নেদুমুদি ভেনু এবং জ্যোতি অভিনয় করেছিলেন। সিনেমাটি নানাবতী হত্যা মামলা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল, এমনি জানা যায়। অভিনেতা দীর্ঘ তিন দশক ধরে মালয়ালম এবং তামিল সিনেমা শিল্পে কাজ করেছেন, যেখানে তিনি ৫০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা।
মেঘনাথন বিভিন্ন চরিত্রাভিনয়ের জন্য সর্বজনবিদিত, বিশেষত ‘পঞ্চাগ্নি’ এবং ‘চামায়ম’-এর মতো সিনেমাগুলিকে খুব বেশী পছন্দ করেছিলেন দর্শক। পঞ্চাগ্নি হরিহরন পরিচালিত এবং নকশাল কে, অজিথার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মান করা হয়েছিল। কে. অজিথা ১৯৬0-এর দশকে কেরালায় নকশাল আন্দোলনের বিশেষ অংশ ছিলেন। ছবিতে ‘ইন্দিরা’ নামের নকশাল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গীতা। আর মেঘনাথনকে দেখা গিয়েছিল তার ছোট ভাই ‘রবি’-এর ভূমিকায় অভিনয় করতে যিনি ছিলেন বেকার এবং মাদকাসক্ত।
নেতিবাচক চরিত্রগুলির শক্তিশালী চিত্রায়নের জন্য তিনি প্রশংসিত হন। সেই অর্থে মালায়লাম সিনেমার অন্যতম সেরা খলনায়ক হিসেবে পরিচিতি ও প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। মেঘনাথনের পঞ্চাগ্নি অ চামায়ম, ছাড়া কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্র হল রাজাধনি, ভূমিগীথাম, চেঙ্কোল, মালাপ্পুরম, হাজি মহানয়া জোজি, প্রয়াইক্কারা পাপ্পান, উদ্যানপালকম, ই পুজায়ুম, কদন্নু এবং ভাস্তভাম।
মেঘনাথন তার সফল চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছাড়াও টেলিভিশনে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি নারীত্বম, মেঘসন্দেশম, কাথায়ারিয়াতে, স্নেহাঞ্জলি এবং চিত্তের মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালে অভিনয় করে গেছে দক্ষতার সাথে। সমাধনা পুস্তকম, যা এই বছরের শুরুতে প্রকাশিত হয়েছিল, এটি ছিল তার সাম্প্রতিকতম চলচ্চিত্র।
তাঁর সহানুভূতি ও শোক প্রকাশ করে, কেরালার সাধারণ শিক্ষামন্ত্রী ভি শিভানকুট্টি। শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, “তার অভিনয় প্রতিভা, ভিলেন চরিত্রগুলিকে নতুন চেহারা দিয়েছেন। প্রয়াত অভিনেতা মেঘনাথনের প্রতি শ্রদ্ধা”,