সাবেকী যাত্রাপালার আমেজ কাটিয়ে এবারের যাত্রা উৎসব ’২৩

- Advertisement -

 নিজস্ব প্রতিনিধি

চিৎপুরের যাত্রার সেই সাবেকী কালচার য়াজ অনেকটাই ফিকে। ৫০০ বছরেরও বেশী এই চর্চিত শিল্প আজও বহমান। তবে যাত্রার সেই উন্মাদনা অনেকটা থিতু হয়ে এলেও এই ডিজিটাল সময়ে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা একাডেমী আয়োজন করেছে ২৮তম যাত্রা উৎসব।     

টানা ৩২ দিন ধরে চলবে এই ২৮তম যাত্রা উৎসব ২০২৩। এই ৩২ দিনে অভিনীত হবে মোট ৩৪ টি পালা। লোকশিল্পের এই মাধ্যমকে আরও মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এবারের আয়োজন তিনটি জায়গায় ভাগ করে করা হয়েছে। 

গতকাল অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর রবীন্দ্রসদনে একতারা মুক্তমঞ্চে উদ্বোধন হয়ে গেল এবারের যাত্রা উৎসব। উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা একাডেমীর সভাপতি অরূপ বিশ্বাস মহাশয়। সাথে সহ সভাপতি ছিলেন ইন্দ্রনীল সেন প্রমূখ। এই উৎসবে যাত্রাপালা ছাড়া থাকছে, আলোচনা, প্রদর্শনী।

যাত্রা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারী পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের ‘যাত্রা’ শিল্পে অবনাদের প্রসঙ্গ তুলে ভূয়সী প্রশংসায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সভাপতি ও সহ-সভাপতিরা। তাঁরা মনে করেন তাঁর অনুপ্রেরণা ছাড়া যাত্রার এই উত্তরণ সম্ভব ছিল না।

এবারের যাত্রা উৎসবের শিরোনাম করা হয়েছে ‘বাংলার জীবন যাত্রা’। অর্থাৎ যাত্রা শিল্প যে মানুষের জীবনেরই অবিচ্ছেদ অংশ সেটা হাতে ধরে বুঝিয়ে দিতেই এই নামাকরণ। শিল্পের নিজস্বতাকে তুলে ধরতে রবীন্দ্রসদন চত্বর লোকজ শিল্পে মুখরিত হয়ে উঠেছিল। খোল আর ঢাকের আওয়াজ উৎসবকে যাত্রা খোলস থেকে যেন বের করে দিতে চাইছে। যাত্রা কনসার্টের আওয়াজ মানুষের হৃদয়ে বংস পরম্পরায় বয়ে নিয়ে আসা ধ্বনি।    

২৪ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর একতারা মুক্তমঞ্চে উদ্বোধন, আলোচনা সভা আর পালাগান হবে এবং রবীন্দ্রসদন মঞ্চে হবে যাত্রাপালার অভিনয়। প্রথমদিন কাকলি চৌধুরী আর অনল চক্রবর্তীর জুটিতে দি নিউ অগ্রগামী যাত্রা কোম্পানীর পালা  ‘জোড়া দিঘির চৌধুরী বাড়ি’ অভিনীত হয় রবীন্দ্রসদন মঞ্চে। এই পালার পালাকার ও নির্দেশক অনল চক্রবর্তী।  

আজ শনিবার বিশ্বভারতী অপেরা প্রযোজিত পালা ‘রাধার চোখে জ্বলছে আগুন’, পালাকার উৎপল রায় ও নির্দেশক মিতালী চক্রবর্তী। অভিনয়ে- মিতালী চক্রবর্তী, শিলাজিৎ, কৌশিক সান্যাল, অপরেশ, সুদক্ষিণা

২৬ নভেম্বর রবিবার থাকছে নিউ দেবাঞ্জলী অপেরার পালা ‘ফুলেশ্বরীর ফুলশয্যা’, পালাকার মঞ্জিল ব্যানার্জী ও নির্দেশক পিয়ালী বসু। অভিনয়ে পিয়ালী বসু, যোশেফরাজ, অহিন মুখার্জী, মাহী, রুমেলা প্রমূখ।

আবার বারাসাতের কাছারি ময়দানে হবে ২৫-২৬ নভেম্বর। সেখানে আজ অর্থাৎ ২৫ নভে থাকছে গণবাণী অপেরার পালা ‘জীবন এক জলসাঘর’, পালাকার সুকুমার রায় আর নির্দেশক শ্যামল মণ্ডল। অভিনয়ে আছেন ঝংকার, রাজকিরণ, ঋতুপ্রিয়া, কুমার রুদ্র, কুমার সংলাপ।

আর ২৬ তারিখ আগামীকাল রবিবার থাকছে নাট্যধার-র পালা ‘মন্দিরে ঝুলছে বধুর লাশ’, যার পালাকার ও নির্দেশক কুমার কিশলয়।  

আগামী ২৭ তারিখ সোমবার থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাত্রাপালার অভিনয় চলবে কলকাতার বাগবাজারে অবস্থিত ‘ফণীভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রামঞ্চে’। সেখানেও পালার সাথে থাকবে আলোচনা সভা, প্রদর্শনী। সেখানেও থাকছে আনন্দভারতী অপেরা, ভৈরব অপেরা, স্বর্ণমঞ্জরী অপেরা, সান্ধ্যাদীপ অপেরা, অগ্নিবীণা অপেরার মতো আরও বিভিন্ন নামীদামী যাত্রাপালার দল। শীতের প্রাক্কালে শহর ও  শহরতলীর যাত্রামোদি মানুষের ঢল নামবে এইসব যাত্রাভিনয়ে এটা প্রতাশা করাই যায়।     

- Advertisement -
সাম্প্রতিক পোস্ট
এধরনের আরও পোস্ট
- Advertisement -