সম্প্রতি কিছু মুসলমান সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়ে মিলে একটি দল গড়ে ‘মহাভারত’ নাটক মঞ্চস্থ করল। জাত-পাতের ঊর্ধে উঠে এই নজির গড়েছে বেঙ্গালুরুর নেলামঙ্গলার হানেলাহল্লী অঞ্চলের একটি গ্রাম।
সমাজে আজও ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পত্তি ও নানা বিষয়ে বিবাদ লেগেই আছে। আর এরকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে সমাজের কাছে তুলে ধরতে তারা বেছে নিয়েছেন মহাভারতের এই মহাকাব্যকে। তারা স্বসম্মানে এই কাহি্নির মূল্যায়ন করে মানুষে মানুষের বিভেদ যুদ্ধের বিরুদ্ধে বার্তা দিতেই এই অবতারণা।
‘কুরুক্ষেত্র’ নামক এই নাটকে, প্রধান চরিত্রগুলি অভিনয় করেছেন মুসলমানরা অভিনেতা অভিনেত্রীরা। এই নাটকে অধিকাংশই মঞ্চে নতুন অভিনয় করেছেন।
পেশায় একজন সাধারণ চাষি ৫২ বছর বয়সী নিয়াজ খান এই নাটকে ‘দুর্যোধন’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। রিহার্সাল করার জন্য এই নিয়াজ খান নির্দেশক হিসেবে নির্বাচন করেন মুনিরাজুকে। তাঁর দক্ষতায় প্রায় দেড় মাস ধরে রিহার্সাল দিয়ে এই নাটক নির্মাণ করা হয়েছে। এই নাটকে সময়সীমা ৯ ঘন্টা। রাত ৯ টা থেকে পরের দিন সকাল ৬ টা পর্যন্ত। নাটকটি হালেনাহল্লির ‘শ্রী বীরঞ্জনেয়া স্বামী কালা বৃন্দা’-র ব্যানারে সংগঠিত হয়েছে।
এর আগে একজন মুসলিম সম্প্রদায়ের অভিনেতা তারা বিভিন্ন দলে আলাদা হয়ে নাটক করেছেন। কিন্তু সেই সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মহাকাব্যকে উপজীব্য করে নাটক মঞ্চস্থ করতে এই প্রথম দেখা গেল।
এছাড়া কৃষ্ণের চরিত্রে অভিনয় করেন জাভেদ পাশা, ধর্মরাজ আবদুল রাজ্জাক সাবের, শকুনি দ্বারা চন্দ পাশা, দ্রোণ জামের, ভীষ্ম নাজির সাব, এবং অভিমন্যু সুবান সহ অন্যান্যরা।
মহিলা চরিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে মহাভারতের একটি চরিত্র 'উত্তরা'-এর নৃত্য পরিবেশনায় অরুন্ধতী, রঙ্গনায়িকা 'রুক্মিণী' নৃত্য পরিবেশন করেছেন।
মহলা পর্বেই এই নাটকের জনপ্রিয়তা ও সাফল্য লক্ষ্য করা গেছে। রিহার্সাল দেখে দর্শকরা প্রশংসা করেছেন এরকমই দাবী করেন নিয়াজ।
দলের মহড়া দর্শকদের আকর্ষণ করেছে বলে নায়জ খান বলেন এবং নাটক দিবসে বিপুল সংখ্যক দর্শক উপস্থিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
"রিহার্সালের দর্শকরা আমাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন," তিনি বলেছিলেন। নিয়াজ খানা আরও দাবী করেন যে সেখানে
হিন্দু এবং মুসলমানরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জীবনযাপন করে থাকে এবং উভয় সম্প্রদায়ই গ্রামে 'বাবায়ে' উৎসব উদযাপন করে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে।