Tuesday, November 19, 2024
Tuesday, November 19, 2024
Homeআলোচনাসোনারপুর উদ্দালকের ‘নীল রঙের মানুষ’

সোনারপুর উদ্দালকের ‘নীল রঙের মানুষ’

সায়ন্তন রায় চৌধুরী

গত ১০ই মে কলকাতার মধুসূদন মঞ্চে সোনারপুর উদ্দালকের প্রযোজনায় পার্থ গোস্বামীর  রচনা ও পরিচালনায় মঞ্চস্থ হল ‘নীল রঙের মানুষ’। সুদক্ষ লেখনী শক্তি এবং সময়কে অনুভব করার নিরন্তর যোগ্যতা না থাকলে এই বিষয়ে নাটক সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। সে ব্যাপারে পার্থ গোস্বামীর কলম ভীষণ শক্তিশালী গোটা নাটক রচনা জুড়েই। মননের মাঝে যে গরল বাসা বেঁধে আছে,   তাকে ক্লীবতায় নয়, ঋজুতায়– নির্ভীকতায় বিষমুক্ত করতে হবে।  অসাধারণ বিষয় এবং সংলাপের শব্দ চয়ন এই নাটককে পুর্ণতা দিয়েছে। দুই অভিনেতার কথোপকথন ঘিরে চরিত্রে মননের গভীরে গিয়ে তার বিভিন্ন জটিল আবর্ত স্পর্শ করে নির্মিত এই নাটক।

যা প্রফেসর চরিত্র চিত্রণে নাট্যকার নির্দেশক পার্থ গোস্বামী এবং জয়ন্ত চরিত্র চিত্রণে অভিজিৎ লাহিড়ী গত সন্ধ্যায় ছিলেন যেন দুই শঙ্খচিল। ডানা মেলে হৃদপদ্ম বিকশিত করে নিজেদের নাট্য অভিজ্ঞান উজার করে দিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পরে মঞ্চে অবতীর্ণ হওয়ায় অভিজিৎ লাহিড়ী বাড়তি প্রশংসার দাবী রাখে। নাটকের মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ নাটকটিকে উত্তীর্ণ করেছে। নির্দেশকের নির্দেশ মেনে নাট্য মুহুর্তের স্তরগুলিকে অসামান্য দক্ষতার সাথে অভিনয় করলেন শ্রী অভিজিৎ। সংক্ষিপ্ত হলেও মেয়েটি চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করেছেন সঙ্গীতা দাস।  

মঞ্চ পরিকল্পনায় মঞ্জুলা গোস্বামী মুন্সিয়ানার অবশ্যই দাবী রাখে। আবহের বহমানতা সুরে বেঁধেছে। সেও তো নির্দেশকেরই   নৈপুণ্য। গোপাল ঘোষের আলো মন্দ নয়। তবে  কিছু জায়গায় তাঁর আলো নিয়ে ভাবার অবকাশ আছে। যেমন জয়ন্তরূপী অভিজিৎ যখন বৃষ্টিস্নাত তখন ভিন্ন আলোর প্রয়োগ দাবী রাখে।  

সবশেষে অভিনেতা রাজার ঘরামীকে মনে রেখে এই সন্ধ্যার আয়োজন নিঃসন্দেহে উন্নত ভাবনা ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ এই আয়োজনে। সোনারপুর উদ্দালক ও নির্দেশকের এই নির্মল  মনোভাব যা আমাদের মানবিক হতে শেখায়। এভাবেই রাজা বেঁচে থাকে, থাকবে আমাদের নাট্য অঙ্গনে। সোনারপুর উদ্দালকের এই উৎসর্গ উদ্দীপ্ত করে নাট্যমোদি মানুষকে। উক্ত সন্ধ্যাটি নাটক ছাড়াও এক অভিনেতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন আর স্মারক সন্ধ্যা হয়ে থাকবে।         

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular