বিশাল ভট্টাচার্য
23/06/2024 সমকালীন সংস্কৃতি আয়োজিত নাট্য সন্ধ্যায় তাদের প্রযোজিত দুটি অসাধারণ নাট্য প্রযোজনার সাক্ষী হয়ে রইলাম. প্রথম নাটক তাদের নবনাট্য “সুভদ্রারা” এবং দ্বিতীয় নাটক “কণ্ঠরোধ”। দুটি নাটকেরই সময়সীমা এক ঘণ্টা। মঞ্চ, নাটক ও নির্দেশনা – সুদীপ্ত সরকার, আলো- সৈকত মান্না।
দৈনিক সংবাদপত্রের ছোট্ট একটি খবর থেকে “সুভদ্রারা” নাটকটি নির্মাণের বিষয় মাথায় আসে নির্দেশকের। বর্তমানে তরুণ থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ বেশিরভাগ মানুষই স্মার্টফোনে আসক্ত। সমাজ মাধ্যমে (Social Media) নিজেকে প্রকাশ করার তাগিদে অনেকেই জ্ঞাণত বা অজ্ঞাণত শালীনতার সীমারেখা অতিক্রম করে ফেলছেন শুধুমাত্র ফলোয়ার্স বাড়ানোর জন্য, বেশি করে লাইক এবং কমেন্ট পাওয়ার জন্য। অর্থ রোজগারের এই ভিন্ন পথে কেউ কেউ হয়তো সাফল্যের স্বাদ পাচ্ছেন কিন্তু অধিকাংশই বিলীন হয়ে যাচ্ছেন সময়ের চোরা স্রোতে। নিম্নগামী রুচিবোধ, অনেকেই অশালীন ট্রোলের শিকার, তবু অল্প সময়ে ধনী হয়ে ওঠা অলীক স্বপ্নের উন্মাদনায় ক্রমশ বিকারগ্রস্থ হয়ে উঠছে আজকের সমাজ. সুভদ্রার মত অনেক মেয়েদের স্বপ্ন অকালে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদনের আগেই অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছে সময়ের অতল গহবরে।
এরকমই একটি সত্য কাহিনী নির্ভর নাটক, সমাজকে সজাগ করা নাটক, সমকালীন সামাজিক অবস্থাকে তুলে ধরার নাটক “সুভদ্রারা”। হারিয়ে যাওয়া হাজার হাজার নারীর যন্ত্রণার কথা তুলে ধরার নাটক “সুভদ্রারা”। নাট্য ভাবনা এবং নির্দেশনা, সমগ্র নাটক জুড়ে আলোর ভাবনা, মঞ্চ নির্মাণ প্রশংসনীয়। কিন্তু নাটকের কয়েকটি অংশে আলো জার্ক হলেও অতটা প্রকাশ পায়নি। সংগীত পরিচালনা- অনিন্দ্য চক্রবর্তী, কোরিওগ্রাফি- ঝুমা চক্রবর্তী, আবহ- বিশ্বজিৎ দাস, আবহপ্রক্ষেপণ- শুভ্রজিৎ বসু, যন্ত্রসংগীত- সুমিত সাঁতরা, মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ ভট্টাচার্য, মঞ্চ সহায়ক- অজিত রায়, রূপসজ্জা- অসীম কুণ্ডু, মঞ্চ উপকরণ- অনিন্দ্য মুখার্জী, সুমন দাস, ব্যবস্থাপনা- দীপেন কান্তি আচার্য। চরিত্র অভিনয়- সুভদ্রা- তৃষা চক্রবর্তী, মধু- সুমন দাস, ঝুমুর- অপর্না দাস, সুজিত- দেবপ্রসাদ ঘোষ, মা- তনিমা দাস সরকার, শংকর- অনিন্দ্য চক্রবর্তী, দেবেন- অনিন্দ্য মুখার্জী, জনৈক/মলয়- শুভ্রজিৎ বসু , কোরাস- দীপাঞ্জন গাঙ্গুলী, অমিতাভ প্রামানিক, বনশ্রী কর, অলিপর্ণা দণ্ডপাঠ, সৃষ্টি মিত্র, সুমিত সাঁতরা, দিপসা চ্যাটার্জি, অনিন্দ্য মুখার্জী, দেবপ্রসাদ ঘোষ, প্রসেনজিৎ মন্ডল, মিত্রা দাস, সুমন দাস।
এই নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হওয়া দরুন অভিনয়ের বেশকিছু জায়গায় খামতি রয়েছে, কয়েকজন অভিনেতা অভিনেত্রী পুরনো ধাতের অভিনয়ের প্রকাশ পেল। মায়ের চরিত্রে যিনি অভিনয় করলেন তার আঙ্গিক, বাচিক এবং সম্পূর্ণ চরিত্রে অভিনয় আধুনিক এবং সাবলীল লাগল। এই নাটকটি স্বচক্ষে দেখা এবং সম্পূর্ণ রিভিউ করার পাশাপাশি একজন অভিনেতা, নির্দেশক, এবং নাট্যালোচক হিসেবে আমি বলতে পারি এই নাটকটির যথেষ্ট গভীরতা এবং যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।