সুব্রত কাঞ্জিলাল
এটা আমার সৌভাগ্য। ভারতবর্ষের ব্রেসটকে আমি দেখেছি। আমার দেশের শেক্সপিয়ার কে আমি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছি। পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চের একজন আধুনিক নাট্য পুরুষকে আমি আজও মনে করি, তাকে বাদ রেখে নতুন থিয়েটার নির্মাণ করা যাবে না। থিয়েটারের অ আ ক খ জানতে হলে উৎপল দত্তকে (Utpal Dutt) সবার আগে প্রয়োজন। নতুন দিনের নতুন থিয়েটার নির্মাণ করতে গেলে উৎপল দত্তকে জানতে হবে। যেমন জানতে হবে শেক্সপিয়ার, রবীন্দ্রনাথকে। ঠিক এইখানে আমাদের ধাক্কা খেতে হয়। এই বাংলার মান্যবর নাট্যতাত্ত্বিকদের অসহনীয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব এবং কুণ্ঠা উৎপল দত্তকে (Utpal Dutt) নাট্যকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে।
প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যাপক শ্রেণী কিছুতেই এই মানুষটাকে মেনে নিতে চান না। এই মানুষটার প্রতিভা যে আন্তর্জাতিক স্তর স্পর্শ করেছে, এইটা চেপে রাখতে চান।
বাংলা থিয়েটারের সর্বোচ্চ শিখর কে?
সত্যজিৎ রায় বহুবার বিদেশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, বাংলা থিয়েটারের সর্বোচ্চ শিখর হল উৎপল দত্তের থিয়েটার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আরো অনেক সাংবাদিক, নাট্য পুরুষ, শিল্প সমালোচকদের কাছ থেকে এইরকম স্বীকৃতি বহুবার উৎপল দত্ত অর্জন করেছেন। অন্যদিকে সিনেমার অভিনয়ে ও তার ভিন্ন বৈশিষ্ট্য বারবার স্বীকৃত হয়েছে।
সিনেমায় উৎপল দত্ত
সত্যজিৎ রায়ের জন অরণ্য, জয় বাবা ফেলুনাথ, আগন্তুক ছবিগুলো উৎপল দত্তকে বাদ দিয়ে ভাবা যেত না। একইভাবে গৌতম ঘোষের পদ্মা নদীর মাঝি, রাজন তরফদারের পালঙ্ক, মৃণাল সেনের ভুবন সোম, কোরাস তারপর ধরুন মেইন স্ট্রিমের এমন অনেক ছবি আছে যেগুলো উৎপল দত্তকে ছাড়া ভাবা যেত না। বোম্বে থেকে ঋষিকেশ মুখার্জি বারবার উৎপল দত্তকে ডেকে নিয়ে গেছেন।
থিয়েটারের উৎপল দত্ত
এইরকম একজন থিয়েটারের স্টলোয়ার্ড কে বাজার পত্রিকায় এবং শাসক গোষ্ঠী বারবার বাতিল করেছে। অচ্ছুত করে রেখেছে, জেলবন্দি করেছে, বেশ কয়েকটি নাটক বাতিল করেছে, একই সঙ্গে থিয়েটারের নবীন প্রজন্মকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে,
উৎপল দত্ত কিছু না। তারচেয়ে বরং অমুক মিত্র, তমুক বন্দ্যোপাধ্যায়, ওই যে আছে চট্টোপাধ্যায় তাদেরকে তোমরা শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করো।
আমরা এ কথা বলতে চাই না, অমুক তমুকদের কাছ থেকে কিছুই শেখা যাবে না জানা যাবে না। তাদেরও মর্যাদা দিতে হবে।
তবে ব্যক্তি প্রীতিকে সরিয়ে রেখে যদি বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে অন্যদের মধ্যে আধুনিক টোটাল থিয়েটারের ভাবনা ছিল না।
অন্যদের মধ্যে কেউ বাচিক অভিনয় কে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। কেউ বা শারীরিক কসর ত অনেক বেশি মূল্য দিয়েছেন, কেউবা অভিনেতার মনস্তাত্ত্বিক বিষয়টাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ রবীন্দ্র প্রযোজনাকে একটা হাইটে পৌঁছে দিয়েছেন।
কেউবা লোকনাট্যকে শহরের আধুনিক রঙ্গমঞ্চে উপস্থাপন করে নতুন মাত্রা সংযোজন করেছেন। কেউ বা বিদেশি নাটক অর্থাৎ চেখভ, টলস্টয়, পিরান দেলো , পিন্টার, ইবসেন প্রমূখদের ভারতীয় দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
কেউ কেউ প্রাচীন ভারতীয় নাটকের মঞ্চায়ন ঘটিয়েছেন। তবে স্বীকার করতেই হবে যে এদের প্রত্যেকের সীমাবদ্ধতা প্রশ্নাতীত। বাংলা থিয়েটার বিগত ৭০ বছর ধরে মূলত দেশের মাত্র ১০% মানুষের গল্প বলেছে।
আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ সংখ্যালঘু শ্রেণীর মানসিক শারীরিক সমস্যার গল্প আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সমাজের বৃহত্তর জীবন, ৮০/ ৯০%
মানুষের জীবন যন্ত্রণা, ক্ষুধার কাব্য বিষয়ে এইসব নাট্য পুরুষদের তেমন কোন আগ্রহ দেখা যায়নি। এদের অনেকেই শিল্পের জন্য শিল্প তত্ত্বতে বিশ্বাসী।
শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে এরা টিনের তলোয়ার হাতে নিতে এগিয়ে আসেননি। বৃহত্তর জনগণ থেকে সব সময় নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করেছেন।
উৎপল দত্ত কোথায় পৃথক এক স্রষ্টা?
শহরের শীতাতপ অত্যাধুনিক রঙ্গমঞ্চ খুঁজে বেরিয়েছেন। শহুরে উচ্চবিত্ত বাবুদের দর্শক হিসেবে প্রত্যাশা করেছেন। এদের নাটকের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে কর্পোরেট মিডিয়া। এইসব কর্পোরেট মিডিয়ার দৌলতে প্রচার পেয়েছেন। সরকারি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
ঠিক এইখানে উৎপল দত্তার সঙ্গে এদের পার্থক্য। উৎপল দত্ত শহরের রঙ্গমঞ্চকে অস্বীকার করেননি। কিন্তু বার বার ছুটে গেছেন শতকরা ৮০/ ৯০ শতাংশ দর্শকের দরবারে। কর্পোরেট মিডিয়ার তোয়াক্কা রাখেননি। তার নাটকে বারবার উঠে এসেছে শ্রেণী সংগ্রামের গল্প।
দেশ এবং বিদেশের বড় বড় বিপ্লবের কাহিনী। সুবিধাভোগী, অলস, সংগ্রাম বিমুখ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রতি তীব্র ঘৃণা ছিল তার । মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত তিনিও বলতেন মধ্যবিত্ত জীবনে কোন গল্প নেই।
আনতন চেখভ, ও হেনরি, মোপাসা, প্রমূখ বিশ্ব সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখকদের মত তিনি ও বিশ্বাস করতেন মধ্যবিত্ত স্তরের মানুষগুলোর উল্লেখযোগ্য কোনো চরিত্র নেই। এরা সাধারণত মেরুদন্ডহীন। অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি এই মেরুদন্ডহীন শ্রেণীর প্রতি সমস্ত আবেগ ঝরে পড়েছে বাংলা থিয়েটারের অনেকের কাজের মধ্যে।
বাংলা থিয়েটার ক্রমশ বন্দী হয়ে পড়েছে মধ্যবিত্তের ড্রয়িং রুমে। ড্রয়িং রুমের মানুষদের মত এইসব নাটকের নাট্যকার নির্দেশক রা বাইরের জগতের কোন খবর রাখেন না। শ্রেণি স্বার্থে এরা শামুকের মতো গুটিয়ে থাকেন।
উৎপল দত্ত বলতেন, বেটে খাটো রোগা পটকা মেরুদণ্ডহীনদের জন্য থিয়েটার হতে পারে না। থিয়েটারের মঞ্চে বড় বড় সাম্রাজ্যের উত্থান পতন ঘটবে। দীর্ঘদেহী পুরুষদের মহাকাব্যিক চরিত্র নির্মাণ ঘটবে। পুরাতন সব ক্লাসিক নাটকের মত নতুন ক্লাসিক নাটকের জন্ম নেবে রঙ্গমঞ্চের পাঠাতনে।
থিয়েটারের দায়বদ্ধতা শেখাতে উৎপল দত্তের ভূমিকা
থিয়েটার তুমি আমি, আমি তুমি, সুখে গৃহ কোণের গল্প বলবেনা। ব্যক্তির চাওয়া পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্নগুলো ড্রয়িং রুম কেন্দ্রিক। আত্মকেন্দ্রিক, কুপ মন্ডুক এইসব চরিত্র কোনদিন ক্লাসিক থিয়েটারের চরিত্র হয়ে উঠতে পারে না।
পরিতাপের বিষয় এরাই শাসক এবং মিডিয়ার সমর্থনে রঙ্গমঞ্চ দখল করে বসে আছে। অন্যদিকে শেক্সপিয়ার থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ হয়ে উৎপল দত্ত চর্চা বন্ধ হতে বসেছে।
উৎপল দত্তের থিয়েটারে আমরা প্রথম দেখতে পাই এক ধরনের মিলিটারি শাসন।
তার আগে মহলাঘর থেকে রঙ্গমঞ্চে অভিনেতাদের নৈরাজ্য চলছিল। অভিনেতারা আবৃত্তি মূলক অভিনয় করতেন। অনেক অভিনেতা সারেগামা পাধা নিশা সপ্তসুরের মধ্যে কণ্ঠস্বর নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালাতেন।
উৎপল দত্ত এই প্রথা ভেঙ্গে দিলেন। সংলাপ উচ্চারণের এক ধরনের স্বাভাবিকতা প্রচলন করলেন। মঞ্চ বিজ্ঞানের প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব আরোপ করলেন। সেট, আলো, আবহ, কোরিওগ্রাফি র মেলবন্ধনে গড়ে উঠলো নতুন মঞ্চ ভাষা। ফেরারী ফৌজ, অঙ্গার, মানুষের অধিকার এ, কল্লোল, নাটকগুলো ভারতীয় থিয়েটারের দিক চিহ্ন হয়ে উঠলো। এলটিজি পর্বের এই প্রযোজনা গুলো আন্তর্জাতিক মান ছুঁয়ে ফেলল।
পরবর্তী সময় পি এল টি পর্ব এ টিনের তরোয়াল, এবার রাজার পালা, পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাস, দুঃস্বপ্নের নগরী, ব্যারি কেড, আজকের শাজাহান, দাঁড়াও পথিকবর, মহাবিদ্রোহ ফল্গু ধারার মতো প্রবাহিত হয়ে চলল।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে একজন নাট্যকার, অভিনেতা, নাট্য পরিচালকের জীবনে ধারাবাহিক ভাবে বছরের পর বছর সৃষ্টির এমন অনন্ত প্রবাহ প্রকৃত অর্থে বিরল। প্রায় প্রতিটি নাটক উৎপল দত্তের সোনার কাঠির ছোঁয়ায় মঞ্চ সফল হয়ে উঠেছে।
সে সময় মফস্বল এবং শহরতলীর শত শত নাট্যকর্মীরা উৎপল দত্তের থিয়েটার দেখবার জন্য ছুটে আসতেন। এই ছুটে আসা আসলে গুরুর কাছে ছাত্রের ছুটে আসার মত। উৎপল দত্তের থিয়েটারের প্রতিটি অভিনয় ছিল ছাত্রদের কাছে ক্লাসরুম।
এইরকম নজির অন্তত বাংলা দেশে অন্য কোন নাট্যপুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। উৎপল দত্ত ছুটে যেতেন শহর থেকে শহরতলী এবং মফস্বলে। গ্রাস রুটের থিয়েটার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। নিজের দল নিয়ে চলে যেতে ন অভিনয় করতে।
সুক্ষ্ম শিল্পের প্রবক্তারা উৎপল দত্তকে কোনোভাবেই স্বীকৃতি দিতে চান না। তার মূল কারণ, উৎপল দত্তের নাটকগুলো আসলে যাত্রা। নাটকগুলো যেন অশিক্ষিত চাষাভূষদের জন্য রচনা করা হয়েছে। এরমধ্যে সুক্ষ শিল্পের ব্যঞ্জনা নেই।
পন্ডিতদের জন্য মস্তিষ্কের ব্যায়াম নেই। নির্মল জলের মতো স্বচ্ছ। আবার একই সঙ্গে কেউ কেউ বলেন, ভয়ংকর রকম রাজনীতি ঘেষা। আসলে যে রাজনীতি ছোটলোকদের উৎসাহিত করে। এরা ভুলে যান শেক্সপিয়ারের নাটক ও আসলে যাত্রা। ভয়ংকর রকম রাজনৈতিক নাটক।
তারপর অধ্যাপক গোষ্ঠীদের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠলো, উৎপল দত্ত ইন্টেলেকচুয়াল নাটক নিয়ে রঙ্গমঞ্চে আসবার চেষ্টা করেনা। আরে বাবু, থিয়েটার তো ইন্টেলেকচুয়াল বাবুদের সম্পত্তি। সস্তা হাততালি পাওয়ার বিষয় নয়।
তবে যে উৎপল দত্ত ইংরেজদের থেকেও ভালো ইংরেজি বলতে এবং লিখতে পারতেন, একই সঙ্গে জার্মান, ফরাসি, রুশ ভাষাতেও দক্ষ ছিলেন। হিন্দি ও উর্দুতে যখন কথা বলতেন, সেটাও ছিল ঈর্ষা র ব্যাপার।
বিশ্বনাট্য সাহিত্য গুলে খেয়ে ফেলেছেন। উচ্চাঙ্গ সংগীতে দক্ষতা অসামান্য। তর্ক সভায় তাকে জব্দ করা মুশকিল। জনপ্রিয়তার পারদ আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। এইসব কারণে উৎপল দত্ত ঈর্ষা কাতর, কাঁকড়ার জাত বাঙালি বাবুদের কাছে চিরকাল অপ্রিয় হয়েছিলেন। প্রথম থেকেই তার পেছনে বংশদন্ড নিয়ে অনেকেই ঘুরতো।
উৎপল দত্ত কি বলতে চেয়েছিলেন নাট্যকর্মীদের?
উৎপল দত্ত প্রথম থেকেই বাংলার নাট্যকর্মীদের বলতে চেয়েছেন যে, তোমার দেশের থিয়েটারের ঐতিহ্যকে সবার আগে মন্থন করো। তার মধ্যেই তুমি তোমার পথ খুঁজে পাবে। শ্রমজীবী জনগণের মধ্যে খুঁজে নিতে হবে থিয়েটারের উপাদান। রঙ্গমঞ্চটাকে দোকানদারিতে পরিণত করো না। সুক্ষ শিল্পের নামে তোমরা থিয়েটারকে জটিল উদ্ভট বুদ্ধির সার্কাসে পরিণত করোনা।
আমার লক্ষ্য করে দেখেছি, সুক্ষ শিল্পের কারবারীরা শাসক এবং কর্পোরেট মিডিয়ার জামাই আদর ভোগ করে। উৎপল দত্তের সমসাময়িক এবং পরেও যেসব সুক্ষ শিল্পের কারবারি নাট্য পুরুষরা কাজকর্ম করেছেন তাদের কখনো শাসকের রক্ত চক্ষু দেখতে হয়নি। পুলিশের নির্যাতন সহ্য করতে হয়নি। জেল বাস করতে হয়নি। এইসব মহাপুরুষরা কোনদিন শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রামের মিছিলে হাঁটেননি।
একদিনের জন্য এরা সাম্রাজ্যবাদ ফ্যাসিকাদের বিরুদ্ধে একটি কথা উচ্চারণ করেননি। ৭০ দশকে বা জরুরি অবস্থার সময় যে সন্ত্রাস নেমে এসেছিল সেসবের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি।
থিয়েটারের বিরুদ্ধে যেসব কালাকানুন তৈরি হয়েছিল তার বিরুদ্ধে কথা বলেননি। সুচতুর ভাবে নিজেদের অবস্থান নিষ্কণ্টক রাখবার চেষ্টা করেছেন। অথচ আমরা দেখেছি যে রবীন্দ্রনাথের মতো মানুষ বার বার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ঘোষণা করেছেন।
আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। শিশির ভাদুড়ীর মতো মানুষও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। সত্যজিৎ রায় কেও আমরা দেখেছি একইভাবে বারবার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। নিজের সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে জনগণের সংগ্রামকে সমর্থন জানিয়েছেন।
আমরা সুক্ষ শিল্পের বিরুদ্ধে নই। আমরা দেশ-বিদেশের ক্লাসিক শিল্পএর চর্চা অবশ্যই করতে চাই। স্লোগান ধর্মী, ক্ষুদ্র দলগত রাজনীতি সর্বস্ব শিল্পের পক্ষে নই। নীলদর্পণ থেকে শুরু করে, মেঘনাদবধ কাব্য, রক্তকরবী, আলমগীর, সিরাজদৌলা, মীর কাসিম, তিতুমীর, হীরক রাজার দেশে, কলকাতা ৭১, পথের দাবী, কল্লোল বাংলা শিল্প সাহিত্যের ঐতিহ্য।
রবীন্দ্রনাথ, সত্যজিৎ রায়, উৎপল দত্ত র মত ইতিহাস পুরুষরা গণ-আন্দোলনের মধ্য থেকে জন্মগ্রহণ করেন। শাসকের নবরত্ন সভায় এদের চাকরি করে বেঁচে থাকতে হয় না। বাল্মিক, স্কাইলাস, দান্তে, সেক্সপিয়ার, ব্রেকট দের মত এরা প্রকৃত অর্থে এক একজন স্রষ্টা। এরা জীবন শিল্পী। চলমান ইতিহাসের এক একটা জাহাজের কান্ডারী।
শেষ কথা
আজকের বাংলা থিয়েটার প্রায় ২ দশক ধরে নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমাদের সামনে কোন জীবন্ত দিশারী নেই। স্রষ্টা নেই। কিছুই সৃষ্টি হয় না। এইখান থেকে বাংলা থিয়েটার কে বার করে নিয়ে আসতে গেলে, আজ উৎপল দত্তকে খুব প্রয়োজন। বলা বাহুল্য তার নাটকের রিমেকিং করে থেমে গেলে হবে না। রিমে কিং
এ যা হচ্ছে তার মধ্যে উৎপল দত্ত অনুপস্থিত।