নিজস্ব প্রতিনিধি
যেমনটা ভাবা গিয়েছিল, তেমনটাই হল। এবার ব্রাত্য বসুকে আক্রমণ করে পালটা পোস্ট করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। লোকসভা ভোটের আগে নাটকের দলগুলিকে দিয়ে মোদী প্রচারের ছক কষেছেন – ব্রাত্যর এমন দাবি নিয়ে জবাব দিতে গিয়ে এবার সুকান্ত মজুমদার লিখলেন, ‘ব্রাত্যর উচিত অভিধান চর্চা করা।’ অর্থাৎ এনএসডি‘র চিঠি নিয়ে শাসক এবং বিরোধী দু‘পক্ষই রুটি সেকতে ময়দানে নেমে পড়েছে।
এনএসডির নতুন গাইডলাইন সম্পর্কিত একটি চিঠি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী তথা নাট্য ব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু দাবি করেছিলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলার নাট্যদলগুলিকে কৌশলে নাটকের মাধ্যমে নিজের প্রচার করতে চাইছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত নাট্যদলগুলিকে একটি ছোট নাটক পাঠানো হয়েছে। যে নাটকটি আসলে কেন্দ্রের গুণগান গাওয়ার সামিল। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে নাটকটি তুলে ধরে গতকাল এমনই দাবি করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
The web of misinformation and lies that @basu_bratya is spreading among the masses is devastating and undermines the very fabric of cultural inclusivity of our Nation. He should first consult a dictionary to understand the difference between "interested groups" & "all groups"… https://t.co/pJSHBTfkJn pic.twitter.com/9sZYC43PlC
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) February 14, 2024
তিনি এমনটাও দাবি করেছিলেন, নাটকটি না করলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে। গোদা বাংলায় ব্রাত্য বসু পশ্চিমবঙ্গের যে দলগুলি কেন্দ্রীয় অনুদান পায়, সেগুলিকে বিজেপির বিরুদ্ধে একটু খোঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু ওই যে কথায় আছে, ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে – তো সেই প্রতিক্রিয়ায় এবার দিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ব্রাত্য বসুর দাবির পালটা দাবি করে তিনি সেই সোশাল মিডিয়াতেই লিখলেন, ব্রাত্য বসু মানুষের মধ্যে মিথ্যে তথ্য ছড়াচ্ছেন।
সুকান্ত মজুমদারের যুক্তি, ভারত রং মহোৎসবের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। বিশ্বের কাছে এটা সবচেয়ে বড় উৎসব। তাই সমস্ত নাট্যদলগুলিকে ভারত রঙ্গ মহোৎসবের ব্যানারে একটি প্রোডাকশন তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। এখানে যাঁরা ইচ্ছুক গোষ্ঠী তাঁদেরকেই এই কাজ করতে বলা হয়েছে। ভাষা দিবসে তা করে দেখাতে হবে। ইচ্ছুক নাট্যগোষ্ঠীকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেটা জানাতে বলা হয়েছিল বলে নোটিশ পোস্ট করে দাবি করেছেন বালুরঘাটের সাংসদ।
কিন্তু ব্রাত্য বসুর দাবি, ‘হিন্দিতে লেখা ‘‘লে আও ওয়াপস সোনে কি চিড়িয়া’ অর্থাৎ ‘সোনার পাখি ফিরিয়ে আনো’ শীর্ষক যে নাটকের কথা বলা হয়েছে তা আসলে মোদীর প্রচার। এই নাটকটি অভিনয় না করলে নাটকের দলগুলির কেন্দ্রের পাঠানো মোটা অনুদান এবং অর্থ বরাদ্দ করা বন্ধ হয়ে যাবে।’’
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মনে করেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের থিয়েটার দলগুলি যেহেতু মূলত বামপন্থী। সেকুলার। তাই তাঁরা সবাই কেন্দ্রের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবেন। ব্রাত্য এনিয়ে কটাক্ষ করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘ঠ্যালার নাম বাবাজি, কাকে বলে দ্যাখ এবার।’’
ব্রাত্য বসুর এই বক্তব্যেরই পাল্টা দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি সোশাল মিডিয়ায় এর জবাবে লেখেন, ‘‘মিথ্যে তথ্যের বার্তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ব্রাত্য বসু। আমাদের দেশে যে সংস্কৃতি আছে তার মানকে নীচে নামানো হচ্ছে এভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে। ওঁর উচিত প্রথমে অভিধান চর্চা করা। তাহলেই বুঝতে পারবেন ইচ্ছুক গোষ্ঠী এবং সব গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য।’’
সোজা কথায় সুকান্ত মজুমদারের দাবি, কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে কোনও বাধ্য-বাধকতা নেই। কোন নাট্যদলগুলি ‘লে আও ওয়াপস সোনে কি চিড়িয়া’ করবে সেটা নাট্যদলগুলির সিদ্ধান্তের ওপরেই ছাড়া হয়েছে। এর সঙ্গে অনুদান বন্ধের কোনও সম্পর্ক নেই।