দেবা রায়
ক্যামেরার সামনে অভিনয়ের বহু পদ্ধতি আছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য কটি প্রাথমিক অভিনয়ের( Film Acting Tips)টিপস দেওয়া হল। যা প্রত্যেক অভিনেতাকে আয়ত্ত করতে হবে যারা ফিল্মে অভিনয় করতে চান।
পাঁচটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের টিপস।
এই পাঁচটি টিপসকি আপনাকে গ্রেট এক্টর বানাতে পারবে কি না জানি তবে অভিনয় শিক্ষার জন্য এটি ভীষণ গুরুত্বপুর্ণ।
1. আপনার চোখ হল অন্তরের জানালা
ক্যামেরা প্রতি মুহূর্ত বন্দী করে- আপনি কি ভাবছেন, আপনি কি অনুভব করছেন, আপনার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং আপনার শারীরিক আবেগ ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই ক্যামেরার সামনে স্বাভাবিক থাকাটা খুব কঠিন কাজ, কিন্তু যার অনুশীলন যত ভালো তিনি তত নিজের অভিব্যক্তি ক্যামেরার সামনে দেখাতে পারবে। চোখ তো নয় চুম্বক। আপনার সামনে ক্যামেরা ছাড়াও আরো অনেক উপকরণ আছে, কিন্তু অভিনেতাকে সেইদিকে নজর দেয়া যাবে না।
লেন্সের চারপাশে একটি আয়তক্ষেত্র কল্পনা করতে হবে। আপনি যে চরিত্র অভিনয় করবেন বলে প্রস্তুতি নিয়েছেন তাকে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ভয় পেলে চলবে না। অর্থাৎ আপনার ভাবনা অনুভুতি খুব স্বাভাবিক ভাবে উপস্থাপন করার জন্য সামনে আছে ক্যামেরা।
2. নীরবতাকে অনুধাবন করুন আর সম্পাদকের বন্ধু হোন
শ্যুটিং চলাকালীন অভিনেতাকে প্রথমে ভাবনা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, সংলাপের প্রতিটি শব্দে জোর দিয়ে যথাযথ উচ্চারণ করে তাকে স্পেস (Pause) ব্যাবহার করে সংলাপ প্রক্ষেপণ অভ্যাস করে শেষে শটে যেতে হবে।
প্রতিটি মুহূর্ত এবং বীট বিবেচনা না করলে সেটা এডিট করার সময় অসুবিধা হবে এবং চরিত্রটি নির্মান করতে প্রভুত সমস্যায় পরতে হবে।
সম্পাদক পোস্ট প্রোডাকশনে সেই প্রতিক্রিয়াগুলি যখন অনুসন্ধান করবেন তখন তা চিত্রনাট্য অনুযায়ী না হলে দৃশ্য সম্পাদনে বিঘ্ন ঘটবে। অর্থাৎ নিজেকে স|ঠিকভাবে উপস্থিত করতেই হবে। আপনি স্ক্রিনে কতটা সাবলীল তার ওপর নির্ভর করবে তোমার চরিত্র নির্মান।
৩। আপনার শ্রোতা বা দর্শককে জানুন, জানাটা জরুরী।
মনে রাখবেন ছায়াছবির বিপরীতে, কোনও লাইভ দর্শক বসে নেই। আপনি ‘শ্যুটিং করেছেন, তারপর দীর্ঘ পোস্ট প্রোডাকশন প্রক্রিয়া পেরিয়ে নানা প্রযুক্তির কেরামতিতে আপনি যখন দর্শকের কাছে উপস্থিত হয়েছন, পারদ পক্ষে আপনি যে অভিনয় দিয়েছিলেন, অধিকাংশ সময়েই দেখা যাবে আপনি তো সেই ব্যাক্তি না, আপনি পরিবর্তিত হয়ে গেছেন। অর্থাৎ আপনি শ্যুটিং চলাকালীনই সুযোগ পাচ্ছেন নিজের ভাবনা ও চরিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেকে আপনার বেস্ট টা দেবার জন্য। সেখানে পরিচালকের পছন্দ না হলে আপনি এন জি পাবেন, কিন্তু একবার শ্যুট হয়ে গেলে সেটাই আপনার বেস্ট।
সেটে পরিচালক, ক্যামেরাম্যান, সাউন্ড রেকডিস্ট, আলোক শিল্পী কেউই দর্শক নন। অর্থাৎ আপনাকেই ভেবে নিতে হবে দর্সক কি চায়। একদিকে নিজের প্রস্তুতি অপর দিকে দর্ষকের মন বুঝে কাজ করা। দর্শককে না জানলে আপনার অভিনয় সম্পুর্ণ হবে না।
৪ প্রস্তুত এবং নমনীয় হন
সিনেমার সেটে চিত্রনাট্য মুহুর্মুহু পরিবর্তন হতে থাকে, শুধু সংলাপ নয়, আলো, সেট, ক্যামেরা এঙ্গেল যা পরিচালকের নির্দেশেই হয়ে থাকে, মানে হতে বাধ্য, ঐ বললাম একবার শ্যুট হয়ে গেলে সেটা রিটেক করা ব্যয় সাপেক্ষ। শ্যুটিং চলতে চলতে ভাবনার এই পরিবর্তন প্রি প্রডাকশনে যতই রিহার্স হোক না কেন, স্পটে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বদলে যায়, সেটা আউট ডোর , ইনডোর দুই ক্ষেত্রেই। অর্থাৎ এই যে অনিশ্চতার সংকেত তা তো আপনি আগে থাকে জানবেন না। তাই আপানাকে দক্ষতার পাশাপাশি ধৈর্যশীল হতেই হবে। অল্পেতে মাথা গরম করলে এই ইন্ডাস্ট্রি আপনার জন্য দরজা বন্ধ করে দেবে। অর্থাৎ আপনি যেন একটি পুতুল বা একতাল মাটি, যেভাবে তারা চালাবেন সেইভাবে আপনাকে তাদের সেই কাজে দক্ষতার সাথে উপস্থিত থাকতে হবে। হবেই। আর বোঝাপড়ায় আপনি যত শান্ত, ভদ্র, স্থির ও সাবলীল হতে পারবেন ততই আপনার ফ্লোরে সকলের সাথে অর্থাৎ পরিচালক মণ্ডলী বা টেকনিশিয়ানদের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন হবে। এনাদের সাথে ছন্দ হারালে আপনি যতই ভালো অভিনেতা হন না কেন, টিকতে পারবেন না।
৫ পরিভাষা শিখুন এবং সেটে কে আছে
ফিল্ম সেটের প্রযুক্তিগত ভাষায় আপনাকে পারদর্শী হতেই হবে। কোন ব্যক্তি সেটে কোন কাজ করে, তারা যে পরিভাষা ব্যবহার করেন এবং তারা কীভাবে সেই কাজ করে তা জানুন তাদের সাথে মিশে বা আলাদা করে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে। সেটে আলোচনা থেকে শটের আকার এবং ক্যামেরা মুভমেন্ট জেনে নিতে হবে। আপনাকে সব সময় DOP বা পরিচালককে জিজ্ঞাসা করতে হবে না।
ফিল্ম এবং টেলিভিশনের জন্য একটি চূড়ান্ত পণ্য তৈরি করার ক্ষেত্রে এক সাথে অনেকগুলি বিভাগ কাজ করে। আপনি সেই তার একটি অংশ মাত্র, বাকি সমস্ত টুকরোগুলিও আপনার চেয়ে চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। একটি ফিল্ম সেট সম্পর্কে সম্যক ধারনা না নিয়ে সেটে গেলে হ্যাকেল হতে হবে।
ঠিক এই কারণেই কাজের প্রতি অবিলম্বে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং ফলস্বরূপ আপনার সাথে সকলের সম্পর্ক বেদনাদায়ক হবে না। ভদ্র এবং সহজে কাজ করার ক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করবেন না তার, আপনি যে ইতিবাচক পদ্ধতিতে নিজেকে পরিচালনা করেন সেটা তাঁরা বুঝতে পেরে আপনাকে ততোধিক সহযোগিতার হাতে বাড়িয়ে দেবেন। সেটা বুঝবেন কীভাবে? আপনি যখন আবার কাজ